ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘শ্রম অধ্যাদেশে চা-শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে’

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৮, ২০ নভেম্বর ২০২৫  
‘শ্রম অধ্যাদেশে চা-শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে’

চা বাগানের শ্রমিকদের বেশিরভাগ নারী শ্রমিক।

অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যমান শ্রমআইন সংশোধন করে শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জাবি করলেও তাতে চা-শ্রমিকের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে চা-শ্রমিক সংঘ। 

চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্যামল অলমিক ও সাধারণ সম্পাদক হরিনারায়ণ হাজরা বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন চা-শ্রমিকরা শ্রমআইনের বৈষম্য নিরসন করার দাবি জানিয়ে আসলেও শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশেও চা-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে।’’

আরো পড়ুন:

গত ১৭ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর গেজেট জারি করা হয়েছে। 

তারা আরো বলেন, ‘‘শ্রমআইনের ১১৫ ধারায় সকল শ্রমিকের বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি প্রাপ্য হলেও চা-শ্রমিকদের জন্য নৈমিত্তিক ছুটি প্রযোজ্য নয়; একইভাবে ১১৭ ধারায় দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কোনো কারখানা অথবা সড়ক পরিবহণ শ্রমিকরা ১৮ দিন কাজে ১ দিন মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি পেয়ে থাকলেও চা-শ্রমিকরা ২২ দিন কাজে ১ দিন মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি পান। সরকার শ্রম অধ্যাদেশ জারি করলেও চা-শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য নিরসন করা হয়নি। এমন কি চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকারের দাবিও উপেক্ষা করা হয়েছে।’’ 

চা শ্রমিক নেতারা আরো বলেন, ‘‘চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকারের দাবি পাশ কাটিয়ে শ্রমআইনের ৩২ ধারায় কোনো শ্রমিকের চাকরি অবসানের ৬০ দিনের মধ্যে বাসস্থান হতে উচ্ছেদ করার আইন সংশোধন করে ৬ মাসের মধ্যে বাসস্থান ছেড়ে দেওয়ার অধ্যাদেশ জারি করে মূলত বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করার আইন অব্যাহত রাখা হয়েছে। বিশেষায়িত চা-শিল্পের প্রয়োজনে চা-শ্রমিকদের বাগানে বসবাস জরুরি। চা-শিল্পের শ্রমিকরা চা-বাগানের বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ হয়ে গেলে তাদের মাথা গোজার বিকল্প নেই। তাই দীর্ঘদিন চা-শ্রমিকরা ভূমির অধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।’’ 

এ নেতারা আরো বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারও চা-শ্রমিকদের প্রতি বিমাতাসুলভ শ্রম অধ্যাদেশ করেছে। শুধু তাই নয়, গত ২৪ আগস্ট চা-শ্রমিক সংঘের পক্ষ থেকে বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বাঁচার মতো মজুরিসহ ১০ দফা দাবি শ্রম উপদেষ্টা বরাবর পেশ করা হয়। ১০ দফা দাবিতে শ্রমআইনের ২৩, ২৬, ৩২, ১১৫, ১১৭ ধারাসহ বিভিন্ন ধারা সংশোধন করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইনের প্রণয়নের দাবি জানালেও সরকার তা আমলে নেয়নি।’’ 

তারা বলেন, ‘‘চা-বাগানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের চাকরিচুত্যিসহ মালিকদের নিপীড়নের একচ্ছত্র ক্ষমতার হাতিয়ার ২৩ ও ২৬ ধারা শ্রম অধ্যাদেশে বলবৎ রাখার মাধ্যমে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের প্রেক্ষিতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সহজীকরণের চাপ বাড়লে শ্রম অধ্যাদেশে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক সংখ্যা ভেদে ২০ থেকে ৪০০ জন শ্রমিকের সমর্থনে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদান করা হলেও প্রতিষ্ঠানপুঞ্জের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। আবার চা-শিল্পে ইতিপূর্বে জাতীয় ভিত্তিক অর্থাৎ সমগ্র শিল্পে একটি ইউনিয়ন গঠন করার আইন করে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল শ্রম অধ্যাদেশেও সেই ব্যাপারে স্পষ্ট করা হয়নি।’’ 

 

ঢাকা/আজিজ/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়