ধামরাইয়ে মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মোবাইল চুরির অপরাধে ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নে এক কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়
ঢাকার ধামরাইয়ে মোবাইল চুরির অপরাধে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া আদর্শ গ্রামে তাকে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে গাছের সঙ্গে বেঁধে একদল লোককে ওই কিশোরকে মারধর করতে দেখা যায়।
ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) দেবাশীষ সাহা বলেন, “ভিডিওটি দেখেছি। কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার কুদ্দুস, রব, হারুন, আসলাম, শাহ আলম, সাব্বিরসহ আরো ১০-১৫ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার ভোরের দিকে কুদ্দুসের বাড়ি থেকে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন খোয়া যায়। ফোনটি খোঁজাখুঁজি করেও পাননি পরিবারের লোকজন। পরে সন্দেহের বশে ওই কিশোরকে বাড়িতে গিয়ে মারধর করেন অভিযুক্তরা। পরে বাড়িতে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে আবারো তাকে মারধর করেন তারা। বিকেলে মোবাইল নেওয়ার কথা স্বীকার করে কিশোর। সে ফোনটি পার্শ্ববর্তী এলাকায় একজনের কাছে বিক্রি করেছে বলে জানায়। পরে স্থানীয়রা সেই ক্রেতার কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে। সন্ধ্যার দিকে এলাকার গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত কুদ্দুস বলেন, “বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করছি। তারপর স্বীকার করছে। পরে মোবাইলটা পাইছি।”
মারধরের শিকার কিশোর জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুদ্দুস তার বাবা রউফ ও আরো কয়েকজন এসে তাকে মোবাইল নেওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞেস করে। একপর্যায়ে কাঠের টুকরা দিয়ে তাকে আঘাত করে। সে অজ্ঞান হয়ে যায়। সেভাবেই তাকে টেনে কুদ্দুসের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে লোকজনের সামনে মারধর করে। বিকেলের দিকে মোবাইলের সন্ধান দেওয়ার পর তাকে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
কিশোর দোষ স্বীকার করে বলে, “আমি মোবাইল নিয়েছিলাম। তাই আমাকে নিয়ে মারছে। তারপর মা গিয়ে ছাড়িয়ে আনে।”
ভুক্তভোগীর মা বলেন, “ওরে জিজ্ঞেস করছি, কিন্তু কিছু বলেনি। আমি কাজে গেছি, আমার ফোন নেই। কাজ থেকে খবর পাই, আমার ছেলেকে আটকে মারছে। তখন এসে এলাকার লোকজন ধরে তাকে ছাড়িয়ে আনি। আমার ছেলে অন্যায় করছে, তাকে পুলিশে দিতো। কী অমানবিকভাবে মারছে। আমি বিচার চাই।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ