যানবাহনের চাপ নেই পদ্মা সেতুর জাজিরা ও মাওয়া টোল প্লাজায়
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ঘিরে যানবাহনের কোনো বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়নি পদ্মা সেতুর জাজিরা এবং মাওয়া টোল প্লাজায়। পাশাপাশি ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে পদ্মা সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের ট্রোল প্লাজা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি যানবাহন স্বাভাবিকভাবে এসে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু অতিক্রম করছে।
সেতু সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা কম ছিল যানবাহনের চাপ। ফলে ফাঁকা মহাসড়ক এবং সেতুতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদ নিলয় জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পারাপার হয়েছে ২০ হাজার ৪১টি যানবাহন। এতে সেতুর উভয় প্রান্তে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭০০ টাকা। এর মধ্যে জাাজিরা প্রান্তে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বিভিন্ন যানবাহন থেকে। জাজিরা প্রান্ত থেকে মাওয়ামুখী যানবাহন পারাপার হয়েছে ১০ হাজার ৪২৪টি।
অন্যদিকে, সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৫০ টাকা। এ সময় মাওয়া থেকে সেতুর জাজিরামুখী যানবাহন পারাপার হয়েছে ৯ হাজার ৬১৭টি।
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ঘিরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনের কোনো বাড়তি চাপ তৈরি হয়নি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকায়। একইভাবে তেমন যানবাহনের কোনো চাপ নেই সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজাতেও।
আবু সাদ নিলয় জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক। যা শুক্রবার (২ জানুয়ারি) পর্যন্ত পালন করা হবে। ফলে রাজধানী থেকে মাওয়ামুখী যানবাহনের চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ‘দেশনেত্রী’, ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেগম খালেদা জিয়া লিভার, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।
চলতি বছর ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি ঘটে। তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে বয়স প্রতিকূল থাকায় এবং নানাবিধ রোগের জটিলতার কারণে তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল, তিনি পূর্বের ন্যায় এবারো কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু চিকিৎসকদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরদিনের মতো না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার দুপুর ২টায় বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে তার স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে।
ঢাকা/রতন/মাসুদ