খোলস পাল্টে নির্বাচনি মাঠে ৩ আ.লীগ নেতা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
তারেক শামস খান হিমু, আশরাফুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট ইলিয়াস হোসেন মনি।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে নিজ নিজ এলাকায় আলোচনায় থাকা আওয়ামী লীগের ৩ নেতা খোলস পাল্টে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অভ্যুত্থানের পর কেউ আত্মগোপনে থাকলেও বর্তমানে প্রকাশ্যে এসে নির্বাচনি মাঠে নামছেন তারা।
এই ৩ নেতা হলেন; টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে অ্যাডভোকেট ইলিয়াস হোসেন মনি, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে তারেক শামস খান হিমু এবং একই আসনে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম। গত সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তারেক শামস খান হিমু কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলার সহ-সভাপতি। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকলেও পরে গ্রেপ্তার হন। প্রায় এক মাস কারাভোগ শেষে জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি এবার জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচন করেছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নব্বইয়ের দশকে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে তারেক শামস খানের রাজনৈতিক উত্থান। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য হন। ২০০৮ সাল থেকে টাঙ্গাইল-৬ আসনে প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে নাগরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলার অভিযোগে মামলা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি আন্দালিভ রহমান পার্থের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। গত ১৪ জুলাই দেশে ফেরার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাকে আটক করে নাগরপুর থানায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তারেক শামস খান হিমু বলেন, “আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে অনেক অবিচার করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে আমাকে অপসারণ করা হয়েছিল।”
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র দাবি করেছে, তাকে দলীয় পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অপসারণ করা হয়নি।
এদিকে টাঙ্গাইল-৬ আসনে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলে দাবি করেন।
ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমি আগেই নির্বাচনমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছি। ৪ হাজার ৯০১ জন ভোটারের স্বাক্ষর নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছি, যার ৯০ শতাংশই নারী ভোটার। নারী-পুরুষের ভালোবাসার ভোটেই আমি বিজয়ী হব।”
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অ্যাডভোকেট ইলিয়াস হোসেন মনি। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত সন্নিলিত আইনজীবী পরিষদের নেতা ছিলেন এবং সম্প্রতি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতিতে তিনি একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
ইলিয়াস হোসেন মনি বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের কোনো সক্রিয় বা পদধারী নেতা ছিলাম না। তবে আইনজীবী পরিষদের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।”
ঢাকা/কাওছার/জান্নাত