জাকসু নির্বাচন: ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
জাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এটাকে অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত দাবি করে প্রার্থিতা ফেরত চেয়েছেন প্যানেলের প্রার্থীরা।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের নেতারা এ দাবি করেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আটদিন পর প্রার্থিতা বাতিলের এই সিদ্ধান্ত অবৈধ, নিয়মবহির্ভূত ও ষড়যন্ত্রমূলক। এর পিছনে ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, ২০২৩ সালে শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মোছায় অমর্ত্য রায়কে বহিষ্কারের দাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা এনামের অনশনের সঙ্গে সংহতি জ্ঞপন করেন জাকসু ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী। তাই অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিলের ক্ষেত্রে তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন তারা।
প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রথমে প্রকাশিত ভোটার তালিকা (১৭ আগস্ট) ও পরবর্তী হালনাগাদ তালিকায় (২৯ আগস্ট) অমর্ত্য রায়ের নাম ছিল। এমনকি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাতেও তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু হঠাৎ প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এটা প্রশাসনের স্পষ্ট জালিয়াতি।
আরো বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি গ্রাফিতি মোছার অভিযোগে অমর্ত্য রায়কে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও একই বছরের মার্চে হাইকোর্ট তাকে কেবল ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়, তবে ক্লাস ও ল্যাব পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এর ফলে কিছু কোর্সে তিনি অকৃতকার্য হন।
ওই বহিষ্কারাদেশের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি নিয়মিতভাবে পড়াশোনা চালিয়ে আসছেন, তাই প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। প্রশাসন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী সমাজ ও ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
তাদের দাবি, এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাকসু নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে। এমনকি উপাচার্যের পূর্বের এক মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে এনে তারা বলেন, প্রশাসনের অনীহা ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নির্বাচনের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
প্যানেল নেতারা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনগত লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনে তার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী