ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ফাগুন হাওয়ায় করেছি যে দান, আমার বাধঁন ছেড়া প্রাণ 

সিদরাতুল মুনতাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  
ফাগুন হাওয়ায় করেছি যে দান, আমার বাধঁন ছেড়া প্রাণ 

বিদায় নিয়েছে শীত, আর ফাল্গুনের হাত ধরে আগমন ঘটছে বসন্তের। ইতিহাস অনুযায়ী, মোঘল সম্রাট আকবর তার রাজত্বকালে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে ‘বসন্ত উৎসব’ অন্যতম। তারপর থেকেই বাঙালি প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে বরণ করে নেয় ঋতুরাজ বসন্তকে। 

বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হয়, কেননা বসন্ত প্রকৃতিকে এক নতুন সাজে সাজিয়ে তোলে। গাছে গাছে আসে নতুন পাতা, শোনা যায় কোকিলের কুহুকুহু গান, চারদিকে থাকে শিমুল-পলাশের মতো বিভিন্ন ফুলের সমাহার, দখিনা দুয়ার খুলে বইতে থাকে ফাল্গুনী হাওয়া। শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে এই বসন্তের আগমনের মাধ্যমেই নতুন করে প্রাণ ফিরে আসে প্রকৃতিতে, রঙিন হয়ে উঠে সবকিছু। সেই সাথে রঙিন হয়ে উঠে মানুষের হৃদয়, তরুণ সমাজ মেতে ওঠে উৎসবে। এছাড়াও প্রতিবার বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় বসন্তকে। 

এ বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাঙালির চিরকালের। কারণ সবসময়ই এই বসন্তের আগমন নিয়ে আসে বাঙালির মিলনের বার্তা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বসন্তের রূপ-লাবণ্য-রসে সেজে ওঠে সমগ্র বাঙালি, নিজেদের রাঙিয়ে তোলে বাসন্তী রঙে। শুরু হয় বিভিন্ন আনন্দ উৎসব। 

এই বসন্ত একদিকে যেমন দিয়ে যায় আনন্দ, অন্যদিকে তেমন দিয়ে যায় বেদনাও। এই বসন্ত নিয়ে আসে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির আগমনী বার্তা। বাঙালি জাতিকে মনে করিয়ে দেয় ভাষা শহীদদের রক্তের ইতিহাস। মনে করিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, কেননা এই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল দেশ স্বাধীন করার প্রাণপণ লড়াই।

এই বসন্তকে ঘিরে রয়েছে তারুণ্যের বিভিন্ন রকম চিন্তা-ভাবনা, কবিদের বিভিন্ন কবিতা, আরো রয়েছে বিভিন্ন গান। এই বসন্তকে নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান, তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান, আমার আপন হারা প্রাণ; আমার বাধঁন ছেড়া প্রাণ।’ এই সবকিছু মিলে বসন্ত আছে বাঙালির মনের অনেকখানি জায়গাজুড়ে। 

প্রতিবছরের মতো এবারও অপেক্ষার প্রহর শেষে আগমন ঘটেছে বসন্তের। এবারও বাঙালি তার চিরায়িত ভালোবাসা দিয়ে বরণ করে নেবে বসন্তকে। আবারও তরুণ সমাজ থেকে প্রবীণ সমাজ পর্যন্ত সবাই যেন প্রকৃতির রঙের সাথে নিজেদেরও রাঙিয়ে তোলে এবং মেতে উঠে ‘বসন্ত বরণ’ উৎসবে সেই আশাই ব্যক্ত করি।

লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়