‘ডা. জাফরুল্লাহ ব্যক্তিগত মুনাফায় বিশ্বাসী ছিলেন না’
গবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ব্যক্তিগত মুনাফায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি সারা বিশ্বে সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন জনগণকে রাষ্ট্রের মালিক বানাতে। তার প্রতিষ্ঠিত সব প্রতিষ্ঠান ছিল সামাজিক সম্পত্তি, ব্যক্তিগত নয়।’
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মিলনায়তনে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাণপুরুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় মূল আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ব্যতিক্রমধর্মী ক্ষণজন্মা ও স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষ ছিলেন। মানবসেবায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন সমাজবিপ্লবী একজন মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি ডিগ্ৰি পরিপূর্ণ না করেই দেশে ফিরে আসেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাস্থ্যের সেবা সবাই পাবেন, এটা ছিল তার মূল লক্ষ্য।'
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সম্মানিত ট্রাস্ট্রি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, বাঙালি জাতিকে শিক্ষিত করতে হলে প্রাইভেট ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন। শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেই হবে না। ডা. জাফরুল্লাহ বড় মাপের চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি গ্ৰাম নিয়ে সবসময় চিন্তা করতেন। তাই তিনি গণস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য তিনি নিয়মিত কাজ করে গেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানই হচ্ছে ডা. জাফরুল্লাহ। পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জানতে হলে তাকে জানা দরকার।’
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ ছিলেন নির্ভীক ও নিঃস্বার্থ একজন মানুষ। তিনি বিলাসিতা করেননি, বরং সবসময় দেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। হতদরিদ্র মানুষদের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র ছিল গণস্বাস্থ্য। তার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লাইব্রেরির মধ্যেই থাকবে আর্কাইভ। এজন্য আমাদের কাজ চলমান। বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবার প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবু হারেস, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
/সানজিদা/মেহেদী/