১৩ দিনের কর্মবিরতিতে অচল যবিপ্রবি 

সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে টানা ১৩ দিন কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। 

এতে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টি বিভাগের মধ্যে ১৫টিরও বেশি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় চরম সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) টানা ১৩তম দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যবিপ্রবিতে কোনো ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি। থিসিস, গবেষণাসহ ল্যাবের সব কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন শিক্ষকরা। ফলে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশেষভাবে বিপাকে পড়েছেন চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। 

জানা গেছে, সমাধানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আলোচনা হলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে যবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেছেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ চলমান কর্মসূচি থেকে ফিরবে না।

যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি ও চলমান আন্দোলন নিয়ে আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। তবে আমাদের তিনটি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।

তাদের দাবিগুলো হলো- অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারীকৃত পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। এ দাবিগুলো নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। দাবি আদায় না হওয়ায় সর্বাত্মক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস, পরীক্ষা বা দাপ্তরিক কার্যক্রম সবকিছুই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। যবিপ্রবির শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান করে প্রতিনিয়ত তাদের দাবির পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে আসছেন।

এদিকে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার ও কর্মকর্তাদের জন্য ইউজিসির সুপারিশকৃত অভিন্ন নীতিমালায় ১২ দফা সংযোজনের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বানে যবিপ্রবি কর্মকর্তারা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেন।

এছাড়া, পেনশন স্কিম 'প্রত্যয়' থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মচারীদের অর্ন্তভুক্তি বাতিল ও ইউজিসি প্রণীত অভিন্ন নীতিমালা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির ডাকে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতি।