জাবিতে ছাত্রশিবিরের মেডিকেল ক্যাম্প

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছে শাখা ছাত্রশিবির। ‘আশ-শিফা হেলথ ক্যাম্প’ শীর্ষক এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইমপ্যাক্ট থ্রু অ্যাকশন (আইটিএ)।

বুধবার (১৪ মে)) দুপুর পৌনে ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এই ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্তও এই সেবা প্রদান করবে মেডিকেল ক্যাম্প।

ক্যাম্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের গাইনি, হৃদরোগ ও বক্ষব্যাধি, নাক, কান ও গলা, চক্ষু, নিউরো মেডিসিন ও স্নায়ুরোগ, পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও কিডনী রোগ, রক্তরোগ, হরমোন, চর্ম, ডায়াবেটিস, বাত-ব্যথা ও প্যারালাইসিস, ফিজিওথেরাপি, মুখ ও দন্তসহ প্রভৃতি রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হবে।

এর পাশাপাশি আদর্শ ওজন ক্যালকুলেশন (বিএমআই), প্রস্রাব, চোখ, নাক, কান ও গলা, ইসিজি, চেস্ট, অক্সিমিটার, আলট্রাসনোগ্রাফি ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে।

চিকিৎসার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ইমারজেন্সি মেডিকেল রেসকিউ প্রশিক্ষণ ও হেলথ চেকআপ সংক্রান্ত প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ। দুই দিনব্যাপী এই ক্যাম্পে অংশ নিতে পারবে ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক।

আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্প ভেন্যুতে উপস্থিত থাকতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ছাড়াও চিকিৎসকদের রেফারেন্স, ফলোআপ ও ওষুধ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনাও প্রদান করা হবে।

জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের অফিস ও প্রচার সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা, যাতে শিক্ষার্থীরা যেকোনো রোগ সম্পর্কে পূর্বেই সচেতন থেকে সুস্থ থাকতে পারেন। আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যসচেতন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আশা করি ভবিষ্যতে টিম ইমপ্যাক্ট থ্রু অ্যাকশন (আইটিএ) শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিবুর রহমান মুহিব বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের বাতিঘর নয়, বরং একটি মানবিক ও সচেতন সমাজ গঠনের চর্চা ক্ষেত্রও। এই ক্যাম্প সেই সচেতনতারই একটি বাস্তব রূপ।”

তিনি বলেন, “এই আয়োজনের পেছনে মূল চিন্তাটি ছিল খুবই সরল কিন্তু গভীর। শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সেবা পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমাদের আশেপাশে অনেকেই রয়েছেন, যারা ব্যস্ততা, অনীহা কিংবা আর্থিক সীমাবদ্ধতায় নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করেন না। এ ক্যাম্পের মাধ্যমে আমরা চেয়েছি সেই ব্যবধানটা কিছুটা হলেও কমিয়ে দিতে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত পরিবারের অসংখ্য শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন, যাদের দৈনন্দিন খাদ্য, বস্ত্রের অর্থ যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়। যখন তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন অর্থের অভাবে নিজের সুচিকিৎসা গ্রহণের সামর্থ্য থাকে না। এভাবে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিরবে ঝরে পড়েন। আমাদের সামান্য সহযোগিতা একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন, পারতপক্ষে জাহাঙ্গীরনগরের স্বপ্নকে প্রস্ফুটিত করতে পারে। এ ধরনের উদ্যোগের গুরুত্ব শুধু রাজনৈতিক না, বরং বহুমাত্রিক। তাই এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক- এই প্রত্যাশাই করি।”