‘ছাত্রলীগের সময় ছিল গণরুম-গেস্টরুম কালচার, এখন চলছে মুড়ি পার্টি’
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ছাত্রদল প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেছেন, “আগে ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ) সময় ছিল গণরুম-গেস্টরুম কালচার, এখন চলছে মুড়ি পার্টির কালচার। মুড়ি পার্টিতে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, প্যানেলের কয়জনের নাম তারা মুখস্থ করতে পেরেছে। যে বেশি প্রার্থীর নাম বলতে পারছে, তাকে উপঢৌকন দেওয়া হচ্ছে।”
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিচার যতক্ষণ পর্যন্ত না হবে, ততক্ষণ এদের বাঁচার অধিকার আছে। এদের খাদ্য ও বাসস্থানের অধিকার আছে, কিন্তু এদেরকে রাজনৈতিক অধিকার তো আপনারা (ঢাবি প্রশাসন) দিতে পারেন না।”
ডাকসু নির্বাচনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আবিদুল বলেন, “ফজলুল হক মুসলিম হলের এজিএস প্রার্থী তোফাজ্জল হত্যা মামলার আসামি, এজিএস রাকিবুল রিয়াদ ও জিএস এনামুল হাসান ২০২২ সালে ছাত্রদলের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং ছাত্রলীগের পোস্টেড ছিল। এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা কিভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারকে আমরা প্রশ্ন করছি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এফ রহমান হলে, গুপ্ত শিবির ও বাগছাস যাদের প্রার্থী আছে, তাদের প্রাধ্যক্ষ পক্ষপাতিত্ব করছেন। এফ রহমান হলের একজন সাংবাদিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং তিনি ছাত্রদের জন্য কাজ করা প্রার্থীদের ব্ল্যাকমেইল করছেন। হল সংস্কারের জন্য যে প্রতিনিধি কমিটি করা হয়েছিল, তারা বলেছিল ডাকসু নির্বাচন হবে না। অথচ এখন তারাই প্রার্থী হয়েছেন। আশা করি, নির্বাচন কমিশন প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “বিজয় একাত্তর হলের এজিএস প্রার্থী তানিম কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হয়ে ছাত্রদের উপর হামলা করেছিল। সে কিভাবে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে? আবার ‘স্বতন্ত্র ঐক্য জোট’ থেকে মমিনুল ইসলাম বিধান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তিনি ২০২২ সালে ছাত্রদলের উপর হামলায় জড়িত ছিলেন। জগন্নাথ হলের স্বপন রায় ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, এখনো পদত্যাগ করেননি। অথচ তিনি ভিপি পদে নির্বাচন করছেন।”
প্রচারণা শুরুর প্রসঙ্গে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, “আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হবে। কিন্তু গতকাল রাত ১টা ১৩ মিনিটে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রচারণা চালিয়েছে। যদিও তিনি ক্ষমা চেয়েছেন, কিন্তু একটি ঘটনা ঘটিয়ে পরে ক্ষমা চাইলে অন্যরা একই সুযোগ নেবে। প্রশাসনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা যেভাবেই প্রচার করতে যাই না কেনো, আশঙ্কা করছি গুপ্ত সংগঠনগুলো আমাদের উপর আক্রমণ চালাতে পারে।”
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, “যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে চান, তাহলে অবশ্যই এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী