নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ফটো
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট অত্যন্ত প্রকট আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ২০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগেই সেই অনুপাতে শিক্ষক নেই।
এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান, শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে গুণগত শিক্ষা থেকে। এছাড়া তৈরি হয়েছে ভয়াবহ সেশনজটের শঙ্কা।
শুধু শিক্ষকই নয়, পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১০ হাজার ৮০৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৫৪০ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ২২০ জন শিক্ষক। এদের মধ্যে আবার অনেকে আছেন শিক্ষাছুটিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের সবগুলোতেই শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। এর মধ্যে, ব্যবস্থাপনা বিভাগে মাত্র দুইজন, ইতিহাস বিভাগ, পরিসংখ্যান ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে মাত্র তিনজন করে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগে মাত্র চারজন করে শিক্ষক দিয়েই একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
প্রতিটি বিভাগের পাঁচটি ব্যাচে মোট ২৫০-৩০০ জন করে শিক্ষার্থী থাকলেও স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা বিভাগগুলোর পক্ষে অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জনি বলেন, “বিভাগে শুরুতে চারজন শিক্ষক থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। বিভাগে বিবিএ ও এমবিএ পাঠ্যক্রম চালু রয়েছে। কিন্তু মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা পরামর্শ বা সমস্যার সমাধানের জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে প্রত্যাশিতভাবে যোগাযোগও করতে পারছে না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “জনবল সংকটের বিষয়টি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) কয়েক দফা চিঠি দিয়েছি। কিন্তু ইউজিসি থেকে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের অনুমতি পাইনি। অনুমতি পেলেই আমরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব।”
এ বিষয়ে ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান বলেন, “ইউজিসিতে খুব শিঘ্রই জনবল ছাড় সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় এই বিষয়টি উঠানো হবে।”
ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী