আফরিন হত্যা: মুখে কালো কাপড় বেঁধে কুবি শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ন্যায় বিচার চেয়ে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে প্রধান ফটক হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশ দিয়ে মিছিল নিয়ে আবার গোল চত্বরে এসে শেষ হয়।
কুমিল্লা শহরে জিন তাড়ানোর চিকিৎসার নামে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আফরিন ও তার মাকে খুন করেন কথিত কবিরাজ মোবারক হোসেন, যাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনা জানাজানির দিনই আফরিনের কুবির সহপাঠীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি তোলেন।
আফরিন পড়নের লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। তার হত্যার দাবিতে বুধবার আবার কর্মসূচি পালন করেন। এদিন লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই মৌন মিছিলে অংশ নেন।
লোক প্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষক এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা সুমাইয়া হত্যার ন্যায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। অবশ্য এই কর্মসূচিতে বিভাগের শিক্ষকদের অনুপস্থিতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা।
সুমাইয়ার সহপাঠী লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ সোহান বলেন, “গত ৮ তারিখ সুমাইয়া এবং তার মাকে নিজ বাড়িতে হত্যার প্রতিবাদে আজকে আমাদের এই মৌন মিছিল। আমরা গতকাল (৯ সেপ্টেম্বর) সিদ্ধান্ত নেই যে, আজ এই প্রতীকী মানববন্ধন করব। আমাদের বিভাগের বাইরে থেকেও আজকে যারা উপস্থিত হয়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
“আজ এখানে একজন শিক্ষক ছাড়া কেউ উপস্থিত হননি এবং সুমাইয়ার জানাজায়ও কেউ অংশগ্রহণ করেননি। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। তাদের মধ্যে হয়তো মানবিকতার অভাব। আমরা সুমাইয়া ও তার মায়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”
সুমাইয়া আফরিনের আরেক সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, “আমরা আজকে এখানে দাঁড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন আমাদের গতকাল কোন আশ্বাস দেয়নি যে, ঠিক কতটা সময় লাগবে পূর্ণ তদন্ত করতে। সুমাইয়া এবং তার মায়ের হত্যার আসামি পাওয়া গেছে কিন্তু আমরা এখনো হত্যার কারণ সম্পর্কে অবগত নই, এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে সুমাইয়া ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হোক।”
লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আরাফাত আমিন রাফি বলেন, “আমাদের এখানে আসার কারণ হচ্ছে পুলিশের যে স্টেটমেন্ট এবং নিহতের ভাইদের যে স্টেটমেন্ট তাতে অসংগতি আছে। এখনো হত্যার কারণ ক্লিয়ার হয়নি, এটা আসলেই হতাশাজনক। এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। এজন্যই আজকে আমাদের অবস্থান।”
গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লার কালিয়াজুড়ী এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া ও তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরইমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার মোবারকই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি।
ঢাকা/এমদাদুল/রাসেল