ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চবির হলে মাদকের রমরমা কারবার

চবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৩ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১১:১৫, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
চবির হলে মাদকের রমরমা কারবার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহিদ ফরহাদ হোসেন হলের দুটি কক্ষে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, গাঁজা, মদ, হুইস্কিসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির যৌথ অভিযানে হলটির সি-ব্লকের ১০৮ নম্বর কক্ষ এবং এ-ব্লকের ১০২ নম্বর কক্ষ থেকে এসব উদ্ধার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হল প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব কক্ষে মাদকের রমরমা কারবার চলছিল। ১০৮ নম্বর কক্ষটি হল সংসদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও এখানে অনুমতি ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন পাঁচ শিক্ষার্থী। অভিযানে কক্ষটিতে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, মদ ও হুইস্কির বোতল এবং ও গাঁজা সেবনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ কক্ষে থাকেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মীর মাইনুল হাসান, আইইআর বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শুখন, ইতিহাস বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নাজমুল হাসান, একই লোক প্রশাসন বিভাগের সামিউল আলম সজল ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের মুশফিক অভি।

অন্যদিকে, ১০২ নম্বর কক্ষে অভিযানে দুই শিক্ষার্থীকে মাদক সেবন করতে দেখা গেছে। এসময় তাদের কক্ষে মদ, গাঁজাসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া গেছে।

এ কক্ষের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল সালাম মাদকের সঙ্গে জড়িত।

এর আগে, আব্দুস সালাম (ফেসবুকে নাম সালমান খান) তার দুই বন্ধুর সঙ্গে মদ পান করার একটি ছবি ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন, যা রাইজিংবিডি ডটকমের কাছে এসেছে।

এ বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, “১০৮ নম্বর কক্ষে অনুমতি ছাড়া পাঁচ শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। তারা আমার কাছে গত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত থাকার সময় চেয়েছিল। ১৫ তারিখের পরেও তারা রুম ছাড়েনি দেখে আমি তালা লাগিয়ে দেই। এর পরদিন শুনি, তারা তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছে। পরে আমি গতকালের (বুধবার) মধ্যে রুম ছাড়তে অফিসিয়াল নোটিশ দেই। কিন্তু তারা রুম ছাড়েনি, এমনকি নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেছে।”

তিনি বলেন, “আজ বিকেলে রুমটিতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, গাঁজা, ইন্ডিয়ান ব্রান্ডের হুইস্কির বোতলসহ বিভিন্ন মাদকের আলামত সরাসরি দেখেছি। তাদের ইতোমধ্যে রুম থেকে বের করে দিয়েছি। এছাড়া আরো ১০২  নম্বর রুমে মাদক পাওযা গেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, “অভিযোগ পেয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে ১০৮ নম্বর রুমে যাই। আমরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাদক দেখেছি। এছাড়া, আরো একটি কক্ষে মাদক পাওয়া গেছে।”

তিনি বলেন, “জড়িতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এছাড়া, একই সময়ে সি-ব্লকের ১০৪ নম্বর কক্ষে তল্লাশি চালানো হলেও কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। তবে কক্ষে যত্রতত্র প্রচুর সিগারেটের প্যাকেট পাওয়া গেছে। তল্লাশির খবর পেয়ে রুম থেকে মাদকের সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, ১০৪ নম্বর কক্ষে গাঁজা সেবনের অভিযোগ উঠেছিল। গত ৫ অক্টোবর হলটির সি-ব্লকের প্রথম তলার পশ্চিম পাশের প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাহিমুল আসিফ প্রাধ্যক্ষ বরাবর এক অভিযোগপত্র দেন।

সেখানে তিনি লেখেন, “সি-ব্লকের ১০৪ নম্বর রুমে সম্ভবত কিছু ছেলে গাঁজা সেবন করছে। আমরা রুম থেকে গন্ধ পাচ্ছি। এর আগেও তারা এমন কাজ করেছে। মাসুদ ভাই (গার্ড) আমাদেরকে অনেকবার অবহিত করেছেন। এজন্য নিশ্চত হয়ে বলছি।”

বি:দ্র: দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, “মাস খানেক আগে আমি শ্রদ্ধেয় হাউস টিউটর কামরুল স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়