ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আর নয় অবহেলা...

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ২০ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২১:৩৭, ২০ অক্টোবর ২০২০
আর নয় অবহেলা...

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ফ্রিল্যান্সাররা দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখ‌্যযোগ‌্য অবদান রাখলেও তাদের তেমন কোনো স্বীকৃতি নেই। অভিযোগ রয়েছে—সামাজিকভাবেও তাদের তেমন মর্যাদা দেওয়া হয় না।  দেখা হয় নিতান্তই অবহেলার চোখে।  তবে, এবার ‘সেই অবহেলার দীর্ঘ রজনী’ শেষ হতে চলেছে।  আলো ফুটে উঠছে পূর্বাকাশে। দীর্ঘদিনের অবহেলিত-বঞ্চিত পাঁচ লাখ ফ্রিল্যান্সারকে সনদ দেওয়ার উদ‌্যোগ নিয়েছে সরকার। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (নেদা)-এর অধীনে তাদের এই সনদ দেওয়া হবে। 

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘নেদা’র একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সাররা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন।  এই কাজের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃতি দাবি করে আসছেন।  তাদের যৌক্তির দাবি পূরণে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।  উদ‌্যোগের অংশ হিসেবে ৫ লাখ ফ্রিল‌্যান্সারকে সনদ দেওয়া হবে।’

এদিকে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কাইকাউসের সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে আলোচনা হয়।  ওই সভায় জানানো হয়েছে, বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার মূল্যায়ন করে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সনদ দেবে নেদা।  এই বিষয়ে একজন পরামর্শকও নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগ পাওয়ার পর একমাসের মধ্যে এই বিষয়ে একটি গাইড লাইন তৈরি করবেন তিনি।  এরপর ‘নেদা’ কর্মশালারও আয়োজন করবে।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আইসিটির ক্রম বিকাশের ফলে এখন অনেকেই হন্যে হয়ে চাকরির খোঁজে না থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে লক্ষাধিক টাকা আয় করছে।  তারা সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাচ্ছে, ফ্রিল্যান্সাররা এখন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত।’

এই বিষয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘‘করোনার সময়ে দেশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আইসিটি বিভাগ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।  তাদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।  পাশাপাশি ‘ফ্রি আইডি’ নামে ডিজিটাল কার্ডও দেওয়া হয়েছে।  যা দিয়ে তারা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করছেন। এছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা মূল্যায়নের করে তাদের সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ’’

আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউট (ওআইআই)-এর জরিপ অনুসারে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অনলাইন শ্রমের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে। ৬ লাখ ৫০০ হাজার নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সরের মধ্যে প্রায় ৫ লাখ নিয়মিত কাজ করছেন। তারা বার্ষিক ১০ কোটি মার্কিন ডলার মুদ্রা আয় করছেন। 

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের গবেষণা বলছে, প্রতি ১০ জন বাংলাদেশি যুবকের মধ্যে একজন বেকার। এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করা হাজার হাজার স্নাতক প্রতিবছর চাকরির বাজারে উপযুক্ত অবস্থান খুঁজে পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এই অবস্থায় কর্মসংস্থানের ব‌্যবস্থা করতে ফ্রিল্যান্সিং খাতকে আরও জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিচ্ছে আইসিটি বিভাগ। 

ঢাকা/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়