ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অ‌্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগে স্পেনের প্রতি আহ্বান

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০  
অ‌্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগে স্পেনের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশে অ‌্যাগ্রো প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগ করতে স্পেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা আছে। স্পেনের বিনিয়োগকারীরা এ খাতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা সহজ করা হয়েছে।’

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি অ্যাসিস বেনিটেজ সালাসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

টিপু মুনশি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে চীন, কোরিয়া, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। চীন, ভারতসহ এ অঞ্চল পণ্যের বড় বাজার। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত দক্ষ যুব জনশক্তি রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের চমৎকার স্থান।’

তিনি বলেন, ‘স্পেন বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহৎ রপ্তানিবাজার। স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ আছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব। আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। আশা করছি, বাংলাদেশের জন‌্য চলমান জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখবে স্পেন।’

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, তৈরী পোশাক বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য। এ শিল্পে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। তাদের সিংহভাগই নারী। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার ও কাজের ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। শ্রমিকরা এখন কর্মবান্ধব পরিবেশে নিরাপদে কাজ করছে। পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশ আরও কিছু পণ‌্য রপ্তানির বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একান্ত মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। স্পেন এ ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে স্পেনের সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ।’

স্পেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘স্পেন বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র। বাণিজ্যিক দিক থেকে স্পেন বাংলাদেশকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে স্পেন খুশি। বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের প্রচুর চাহিদা আছে স্পেনে। স্পেন আগামীতে আরও বেশি পোশাক বাংলাদেশ থেকে আমদানী করবে, বাণিজ্যের পরিধিও বাড়বে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, এতে স্পেন খুশি। এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশনের পরও স্পেন বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্পেনের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করছে। স্টিল ব্রিজ, রেলওয়ে নির্মাণসহ বেশকিছু খাতে স্পেনের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করছে এবং কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সফর বিনিময় করলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশের অ্যাগ্রো প্রসেসিং সেক্টরে বিনিয়োগের বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখবে স্পেন।’

জানা গেছে, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে স্পেনে ২,৫৫৪.৮২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮০.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। করোনার কারণে গত অর্থবছরে বাণিজ্যের পরিমাণ কম ছিল।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়