ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমলো এডিপি বাস্তবায়নের হার

কেএমএ হাসানত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ৪ এপ্রিল ২০২১  
করোনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমলো এডিপি বাস্তবায়নের হার

চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.১ শতাংশ কম হয়েছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ২৪.৩৩ শতাংশ, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৭.৪৩ শতাংশ।

রোববার (৪ এপ্রিল) ‘বাজেট ২০২০-২০২১:দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন’ জাতীয় সংসদে চলমান অধিবেশনে উপস্থানকালে এ তথ্য জানানো হয়।  জানা গেছে, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সংসদে এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকর বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এনবিআর এর তথ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে এনবিআর কর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.৯৫ শতাংশ বেশি।  করোনার প্রভাব সত্ত্বেও রাজস্ব খাতে নানারকম সংস্কারমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন চলমান থাকায় রাজস্ব আদায়ের হার আশাব্যঞ্জক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট সরকারি ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা, অর্থাৎ বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় সরকারি ব্যয় ১০.৫৮ শতাংশ কমেছে।  করোনার প্রভাব দীর্ঘতর হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারি ব্যয় প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তবে সামনের দিনগুলোতে উক্ত ব্যয় বাড়ানোর জোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সরকারের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এর তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ২৪.৩৩ শতাংশে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৭.৪৩ শতাংশ।  কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বাস্তবায়ন অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়ে আছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে প্রবাস আয় হয়েছে ১৬.৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭.৫৯ শতাংশ, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫.৫২ শতাংশ।  সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় ও রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করাসহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম নেওয়ার কারণে প্রবাস আয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে।  আগামী দিনগুলোতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির এ ধারা বজায় রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অর্থমন্ত্রীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উর্ধ্বমূখী প্রবণতা চলমান রয়েছে।  উক্ত রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে দাঁড়িয়েছে ৪৩.১৭ বিলিয়ন ডলারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে রপ্তানি আয় ১৯.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০.৩৬ শতাংশ কম।  বিগত অর্থবছরের একই সময়ে এক্ষেত্রে সংকোচনের হার ছিল ৫.৮৪ শতাংশ। বর্তমান অর্থবছরে রপ্তানির কিছুটা উর্ধ্বগতি করোনার প্রভাব কাটিয়ে রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ানোর ঈঙ্গিত বহন করে।

আমদানি ব্যয় ৬.৮ শতাংশ কমে তা ২৫.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।  মূলত করোনার প্রভাবে শিল্প খাতের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কম হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা সাময়িক।  এরপরও দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে ৮.৩৭ শতাংশ।

বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর ২০১৯ এর ৫.৫৯ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ডিসেম্বর ২০২০ সময়ে ৫.৬৯ শতাংশ হয়েছে।  অন্যদিকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর ২০১৯ এর ৫.৭৫ শতাংশ থেকে  কমে  ডিসেম্বর ২০২০ সময়ে ৫.২৯ শতাংশ হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে অবহিত করা হয়।

হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়