ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ব্যয় কম হওয়ায় বাজেট ঘাটতিও কমেছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০৯:৫৮, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
ব্যয় কম হওয়ায় বাজেট ঘাটতিও কমেছে

করোনার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কম হয়েছে, আর একারণে সরকারের সামগ্রিক বাজেট ঘাটতিও অনেক কমেছে।

প্রাথমিক মূল্যায়নে গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি হয়েছে ৭৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। যা সংশোধিত বাজেট ঘাটতির ৪২ দশমিক ৫২ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এর আগের অর্থবছর অর্থ্যাৎ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল একলাখ ৫৪ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি বিগত চার অর্থবছরের চেয়ে কম। প্রাথমিক হিসেবে গত অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ৭৪ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের মূল বাজেটে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় করার অক্ষমতা কারণে বাজেট ঘাটতি অনেককাংশে কম হয়েছে। এখন প্রকৃত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ হচ্ছে সংশোধিত ঘাটতির ৪২ দশমিক ৫২ শতাংশ মাত্র। সে হিসাবে বাজেটে ঘাটতি কমেছে প্রায় সাড়ে ৫৭ শতাংশ।

জানা গেছে, গত বছরের বাজেট ঘাটতি ছিল গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্রকৃত সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এর আগে প্রতিবছরই বাজেট ঘাটতি টাকার অঙ্কে পর্যায়ক্রমে বেড়েছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রকৃত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা। ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে টাকার অঙ্কে বাজেট ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮১১ কোটি টাকা এবং ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।

এদিকে, গত অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উৎস থেকে সরকার মোট ঋণ নিয়েছে ৮০ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের প্রায় ২৬ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়নি বা ব্যয় করা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়ন হার হচ্ছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। যা বাজেট ঘাটতি কমে যাওয়ার এটি একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ওদিকে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। এর বিপরীতে অর্থবছর শেষে প্রকৃত ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়নি। এর আগের অর্থবছরে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল প্রায় ৮৪ শতাংশ।

অর্থ বিভাগের প্রাথমিক হিসাব মতে, বাজেট ঘাটতি পূরণে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট ৮০ হাজার ৫২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার ২৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং অবশিষ্ট ৬৫ হাজার ২৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ‌্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৩২ হাজার ৬৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং সঞ্চয়পত্র খাত থেকে প্রায় ৪৩ হাজার ৩১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত বাজেটে এ দুই খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭৯ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ৩০ হাজার ৩০২ কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম ঋণ নিলেও সঞ্চয়পত্র খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১২ হাজার ৭২৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/ হাসনাত/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়