ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

অবলোপন মন্দ ঋণ বেড়েছে ১৮৭ কোটি টাকা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০১, ২৪ জুলাই ২০২২  
অবলোপন মন্দ ঋণ বেড়েছে ১৮৭ কোটি টাকা

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অবলোপন মন্দ ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে অবলোপনকৃত মন্দ ঋণের স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৬১২ কোটি ৮ লাখ টাকা। ২০২০-২০২১ শেষে অবলোপনকৃত মন্দ ঋণের স্থিতি ছিল ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অবলোপন মন্দ ঋণের পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১৮৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাথে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর অবলোপনকৃত ঋণ স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি কমিয়ে আনতে পারেনি ব্যাংকগুলো। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে স্থিতির পরিমাণ ৩১৫ কোটি টাকা বেড়েছে।

২০২১-২০২২অর্থবছরে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আদায়ের পরিমাণ এ সময়ে বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ১৯২ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে ২৭৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে সোনালী, জনতা ও বেসিক ব্যাংক এপিএ’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অবলোপনকৃত ঋণের শীর্ষে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। এরপর অগ্রণী, জনতা, বিডিবিএল, বেসিক ও রূপালী। তবে এপিএ’র লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, একমাত্র বেসিক ব্যাংকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অবলোপনকৃত ঋণ রয়েছে। অপর পাঁচ ব্যাংকে অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।

২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে সোনালী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ৯২০ কোটি টাকা। বিপরীতে গত জুন শেষে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৬ হাজার ৭৮৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা। অন্যদিকে এপিএ’র আওতায় গত অর্থবছরে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে সোনালীর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ১২৭ কোটি টাকা।

এপিএ’র আওতায় অগ্রণী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে অগ্রণী ব্যাংকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪৫ কোটি টাকা।

জনতা ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অন্য দিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে জনতার আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ ৮৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

বিডিবিএলের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।  অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে বিডিবিএলের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৭ কোটি ৩ লাখ টাকা। এপিএ’র আওতায় বেসিক ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩৭ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে বেসিকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে পাঁচ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

রূপালী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯০ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৮৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে রূপালীর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ কোটি টাকা। আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

/হাসনাত/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়