ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ৫ নভেম্বর ২০২২  
আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা

আটা। ছবি সংগৃহীত

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আটা-ময়দার দাম। সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আটায় বেড়েছে ৫ টাকা। চালসহ নিত্যপণ্য নিয়ে ভোগান্তির মধ্যেই আটার দাম বাড়ায় শঙ্কিত ভোক্তারা।

জানা গেছে, এক কেজি খোলা আটার দাম ৬০ থেকে ৬২ টাকা। খোলা আটার কেজি মোটা চালের চেয়ে ১০ থেকে ৫ টাকা বেশি। খোলা ময়দা প্রতি কেজি ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মোড়কজাত (প্যাকেট) আটার দামও বাড়ছে। দুই কেজির দাম বেড়ে হয়েছে ১২৬-১৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১১০-১১৫ টাকা।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে গমের দাম বৃদ্ধি পায়। পরে কৃষ্ণসাগর দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে নির্বিঘ্নে গম সরবরাহে ইউক্রেন-রাশিয়া চুক্তি পর দাম কমতে শুরু করে। সম্প্রতি রাশিয়া এ চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর বাড়ছে গমের দাম।

গত ৩১ অক্টোবর ইউএসডিএর প্রকাশিত গ্লোবাল অ্যাগ্রিকালচার ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (জিএআইএন) গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে কেজিতে মোটা চালের গড় দাম ছিল ৫০ টাকা ২০ পয়সা। ওই সময়ে আটার গড় দাম ছিল ৫৫ টাকা।  অন্যদিকে চালের দাম গত আগস্ট মাসে ছিল ৫৩ টাকা। তখন আটার দাম ছিল ৫২ টাকার নিচে। জুলাই মাস থেকেই চালের চেয়ে আটার দাম তুলনামূলক বেশি বাড়তে থাকে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিদিনের বাজার প্রতিবেদন অনুযায়ী, খোলা আটার দাম এক মাসে ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং এক বছরে ৬৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। মোড়কজাত আটার দাম এক মাসে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ এবং এক বছরে ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে।

শনিবার রাজধানীর রায়েবাগ বাজারের রাসেল স্টোরের ব্যবসায়ী মো. রাসেল বলেন, ‘গত সপ্তাহে খোলা আটার দাম ৫৫ টাকা ছিল। এ সপ্তাগে থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির আটার বস্তা (৫০ কেজি) গত সপ্তাগে দাম ছিল ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকা। এ সপ্তাহে ২৮৫০ টাকা থেকে ২৯০০ টাকার মধ্যে কিনেছি। প্রতি কেজি ৫৭ টাকা থেকে সাড়ে ৫৭ টাকায় কিনতে হয়েছে। এরপর পরিবহন খরচ আছে। তারপরও এ দামে আটার বস্তা পাওয়া যাচ্ছে না। ’

খোলা আটা কিনতে এসে হতাশা প্রকাশ করেন রিকশাচালক মনির হোসেন। তিনি বলেন, এখন  খোলা আটার দাম চালের চেয়ে বেশি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ টন গম দেশে উৎপাদিত হয়। বাকিটা আমদানি করা হয়। আমদানির বড় অংশ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। বাকিটা, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়াসহ আটটি দেশ থেকে আমদানি করা হয়। বৈশ্বিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাব এসে পড়েছে আটার বাজারে।

অন্যদিকে দেশের বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি দাম কমানোর জন্য শুল্কহার কমিয়ে আনা হয়েছে। এতে চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরকারকে চাল, তেল, আটার মতো নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে ভোক্তার স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। বৈশ্বিক কারণে অনেক জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম অতিরিক্ত বাড়াচ্ছেন। নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে আমরা দেখি, সুযোগ বুঝে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতা রয়েছে। এ বিয়য়ে সরকারকে কঠোর মনিটরিং করতে হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার তদারকি আরও জোরদার করা হবে। পণ্যের দাম সহনীয় করতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রয়েছে। পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।  

/আসাদ/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়