ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভারত থেকে ৩ পণ্য আমদানির পরিমাণ নির্ধারণে কমিটি গঠন

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ০৯:২২, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
ভারত থেকে ৩ পণ্য আমদানির পরিমাণ নির্ধারণে কমিটি গঠন

দেশের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে তিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পরিমাণ নিরূপণে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই তিন পণ‌্যের মধ্যে রয়েছে চাল, গম ও চিনি। গঠিত এই কমিটি নির্ধারণ করে দেবে কোন পণ্য কী পরিমাণ আমদানি করা যাবে।  

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর আগে সাতটি নিত্যপণ্যের আমদানি কোটা সুবিধা চেয়ে ভারতকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছিল। এই পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল, আদা ও রসুন। বাংলাদেশের পণ্য আমদানির প্রস্তাবটিতে চাল, গম ও চিনির সম্ভাব্য পরিমাণ বেশি হওয়ায় ভারত সরকার তাতে আপত্তি জানায়।

এরই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভা শেষে এতে অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা বলেন, ৫ সদস্যের কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। ওই কমিটি গত ১০ বছরের ডাটা বিশ্লেষণ করে তিনটি পণ্যের আমদানির পরিমাণটা নির্ধারণ করবে।

তিনি বলেন, আমরা চাই, ভারত যখন সংকটকালে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তখন আমরা যেন মালদ্বীপের মতো পণ্য আমদানি করতে পারি। আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তিনটা নিত্যপণ্যের আমদানির পরিমাণ বেশি দেখিয়েছিলাম। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়, এই পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই। কারণ অতীতে কখনও বাংলাদেশ এত বিশাল পরিমাণ চাল, গম ও চিনি ভারত থেকে আমদানি করেনি। তাই বাংলাদেশ তাদের পরিমাণের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করুক। এরই প্রেক্ষাপটে তিন পণ্যের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারত জানিয়ে দিয়েছে খেসারির ডাল আমদানির জন্য কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। কারণ ভারতেই খেসারি ডালের সংকট রয়েছে। ভারত থেকে রমজানের আগে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের আমদানির কোনো বাধা নেই।

এ দিকে পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান হচ্ছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোহাম্মদ মাহাবুবু হক। অন্যান্য সদস্য হচ্ছেন পররাষ্ট্র, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপ-প্রধান।

উল্লেখ্য, বর্তমানে নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটান ভারত থেকে কোটা সুবিধায় খাদ্যপণ্য আমদানি করছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। ভারত থেকে বরাবর চাহিদা মতো বেশি দর কষাকষি করে পণ্য আমদানি করা হতো। এর পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানি করতেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলমান যুদ্ধের কারণে এ দুটো দেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। বিকল্প বাজার থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করা সম্ভব হলেও তা সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। এ কারণে ভারত থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানিতে আগ্রহী সরকার।

সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ভোগ্যপণ্যের কোটাসুবিধা চাওয়া হয়। সেই সময় বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য প্রতি বছর ৪৫ লাখ টন গম, ২০ লাখ টন চাল, সাত লাখ টন পেঁয়াজ, ১৫ লাখ টন চিনি, ১.২৫ লাখ টন আদা, ৩০ হাজার টন মসুর ডাল ও ১০ হাজার টন রসুনের কোটা চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এবার এসব পণ্যের চাহিদা কিছুটা কমিয়ে নতুন করে প্রস্তাব করা হবে। গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভারতের কাছে পরিমাণের তালিকা পাঠানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়