ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সুরের মূর্ছনায় হেমন্তের রজনী

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ১৫ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সুরের মূর্ছনায় হেমন্তের রজনী

হেমন্তে চারিদিকে সুরের কাঁপন তুলে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে জমে উঠেছে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট ২০১৯’।

সেখানে লোকসংগীতের মধুর মায়ায় মেতে উঠেছে হাজার দর্শক।উৎসবের পঞ্চম আসরের পর্দা উঠেছে গতকাল ১৪ নভেম্বর। ফোক ফেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরুতেই মঞ্চে আসেন শিল্পী শফিকুল ইসলাম। ‘মন মজালে ওরে বাউলা গান’, ‘বন্ধু তুমি কই গেলা’, ‘কি সুন্দর এক গানের পাখি’ শিরোনামের গানগুলো গেয়ে শোনায় শফিকুল।

এরপর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে মঞ্চে আসেন বর্তমান সময়ের বাংলা লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি। 'তাকদুম তাকদুম বাজাই' গান দিয়ে শুরু করেন তার পরিবেশনা।উৎসবের মঞ্চে 'ভাব আছে যার গায়', 'একখান পান চাইলাম পান দিলে নাহ', 'আমি তো ভালা না' শিরোনামের গানগুলো পরিবেশন করে দর্শক-শ্রোতাদের মাতান তিনি। 'আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম' গানটির মাধ্যমে নিজের পরিবেশনা শেষ করেন কামরুজ্জামান রাব্বি।

এর পরে মঞ্চে আসেন কাজল দেওয়ান।মঞ্চে এসে তিনি বলেন, ‘আমি গ্রামের মানুষ। গ্রামের গান গাই। আজ শহরের মানুষকে শোনাবো আমার গ্রামের গান।’‘জীবনরে জীবন ছাড়িয়া না যাও মোরে’, ‘তুই জীবন ছাড়িয়া গেলে আদর করবে কে আমারে' শিরোনামের গান ধরে দর্শকের মনে ঝড় তুলেছেন কাজল দেওয়ান। এছাড়া ‘দিন ফুরাইলেই ভাইঙ্গা যাইবো এই রঙ্গের মেলা’, ‘পিড়িতের বাজার ভালো না’, ‘আমায় এত দুঃখ দিলি বন্ধু রে বন্ধু’, ‘আমি তোর পিড়িতের দিওয়ানা রে দিওয়ানা’ শিরোনামের গান শোনান।গানের মাঝে মাঝে গানের মর্মকথাও তুলে ধরেন কাজল দেওয়ান।

রাত ৮টা ২০ মিনিটে মঞ্চে উঠেন মালিয়ান লোকসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি হাবিব কইটে।এরপর একের পর এক মালিয়ান গানে মুগ্ধ করেন বাংলাদেশি শ্রোতাদের।

এছাড়া গিটারের ও সুরের জাদুতে আর্মি স্টেডিয়ামে মালিয়ান পরিবেশ তৈরি করেন এই ফোক শিল্পী। গান গাওয়ার মাঝে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বারবার।

রাত ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে মঞ্চে ওঠেন বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত, বাউল ও সুফি গানের জনপ্রিয় শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন।লালন সাইয়ের 'আল্লাহ বলো মন রে পাখি' গান দিয়ে নিজের পরিবেশনা শুরু করেন জনপ্রিয় এ শিল্পী। পঞ্চাশ মিনিটের পরিবেশনায় 'একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর', 'দে দে পাল তুলে দে', 'আমারে আসিবার কথা কইয়া', 'সোনার ময়না' সহ একের পর এক আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করেন। গানের আধ্যাত্মিকতার সুরের মায়াজালে মুহূর্তেই পুরো আর্মি স্টোডিয়াম যেন আধ্যাত্মিক জগতে ডুব দেয়। এছাড়াও একাধিক জনপ্রিয় ফোক গান পরিবেশন করেন তিনি।

ফোক ফেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রধান চমক ছিলেন পাকিস্তানের গায়িকা হিনা নাসরুল্লাহ। সুরেলা কণ্ঠের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিতি তার। দ্বিতীয় দিনের সর্বশেষ পরিবেশনাটি ছিলে তার। গানের সুরে ঘোরলাগা এক পরিবেশ তৈরি হয় বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে। প্রথমেই কণ্ঠে তোলেন ‘সুবহান আল্লাহ, সুবহান আল্লাহ’ সুফি গানের সুর। এরপর নবীর শানে গেয়ে ওঠেন ‘ইয়া রসুল আল্লাহ, ইয়া হাবিব আল্লাহ’।এরপর হিনা গান বারলাগাল উলাবি কামালিহি নাতে রাসুল। এরপর নুসরাত ফতেহ আলী খানসহ আরও বেশ কয়েকজন শিল্পীর জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন।

লোকগানের সুর মাধুর্য বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দিতে সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর আয়োজন করা হচ্ছে ফোক ফেস্ট। তিন দিনব্যাপী এই লোকসংগীতের আসর প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে।
 

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়