ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

এলআরবি নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের নিষেধাজ্ঞা

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ২৫ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ০৬:১৪, ২৬ আগস্ট ২০২০
এলআরবি নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের নিষেধাজ্ঞা

আইয়ুব বাচ্চু

‘এখন থেকে আমাদের সম্মতি ব্যতিরেকে এলআরবি নামের অপব্যবহার করে আইয়ুব বাচ্চুর কপিরাইট নিবন্ধনকৃত গানগুলো পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। নইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’—এক বিবৃতিতে এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়াত ব্যান্ড সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর দুই সন্তান ফাইরুয সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাযওয়ার আইয়ুব।

শ্রোতাপ্রিয় ব্যান্ড এলআরবি-এর একক প্রতিষ্ঠাতা আইয়ুব বাচ্চু। মৃত্যুর আগে ২৩টি অ্যালবাম ও ব্যান্ড নিজের নামে নিবন্ধন করে গেছেন তিনি। এখন থেকে এলআরবি নামে কোনো কার্যক্রম বাংলাদেশ কপিরাইট আইন লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।

যৌথ এ বিবৃতিতে ফাইরুয সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাযওয়ার আইয়ুব বলেন—একজন শিল্পী এবং তার সংগীতের স্রষ্টা হিসেবে আমার বাবুই (বাবা) তার সৃষ্টিকর্মগুলো দীর্ঘকাল আগে কপিরাইট করার জন্য উদ্যোগী হন। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হয়ে তিনি তার গানের পুরো তালিকা কপিরাইট নিবন্ধিত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিলেন। আইনিভাবে এগিয়ে যাওয়া, শিল্পীদের অধিকার এবং মালিকানা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রতি বাবুই সর্বদা লড়াই করেছেন। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা পরিবার হিসেবে তার লক্ষ্য পূরণে, তার অসম্পূর্ণ স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নানা প্রতিকূলতার পরেও আমরা এখন বাবুইয়ের অসমাপ্ত কাজ সুন্দরভাবে শেষ করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার অসম্পূর্ণ যাত্রাটি শেষ করা এবং কেউ যাতে তার সৃষ্টিকর্মর মালিকানার অপব্যবহারের সুযোগ খুঁজে না পায়, এটা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।

এলআরবি ব্যান্ড আইয়ুব বাচ্চু এককভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন—এলআরবি নামে ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ আমার বাবুই আইয়ুব বাচ্চু সম্পূর্ণ এককভাবে নেন। তাই তিনি এককভাবে তার রচিত, সুরারোপিত ও নিজ কণ্ঠে পরিবেশিত ২৭টি অ্যালবামের সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট করবার পাশাপাশি ‘এলআরবি’ নাম-সংবলিত লোগো এবং ব্যান্ডটিও তার নামে নিবন্ধিত করেছিলেন। রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও তার রচিত, সুরারোপিত ও স্বকণ্ঠে পরিবেশিত আরো অসংখ্য গান রয়েছে, যেগুলো কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রক্রিয়াধীন। তার অকাল মৃত্যুর পর সন্তান হিসেবে আমরা তার বৈধ স্বত্বাধিকারী।

পরিবারের অনুমতিবিহীন এলআরবি ব্যান্ডের গান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন—আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে দেখছি যে, বিভিন্ন ব্যক্তি বিচ্ছিন্নভাবে আমাদের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ না করেই তার (আইয়ুব বাচ্চু) রচিত, সুরারোপিত গান নিজ কণ্ঠে পরিবেশন করছেন। গানগুলোও কোনো স্ট্যান্ডার্ড বজায় না রেখে যেনতেনভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে গাইছেন; এমনকি বাণিজ্যিকভাবেও ব্যবহার করছেন। যা বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য। এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য বাবুইয়ের সৃষ্টিকর্মের আইনি মালিকানার ক্ষেত্রে যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়যুক্ত হওয়া।

ভক্তদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন—বাবুই সর্বদা বিশ্বাস করতেন যে ভক্তরা তাঁর অক্সিজেন। তাদের কারণে তিনি বেঁচে ছিলেন, বেঁচে থাকবেন। সন্তান হিসেবে আমরাও তার ভক্তদের আশ্বস্ত করতে চাই, বাবুই তার সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের মাঝে যেভাবে ছিলেন সেভাবেই যেন থাকেন সেটাই আমরা শতভাগ নিশ্চিত করবো। আইয়ুব বাচ্চুর ভক্তদের কাছে একটাই চাওয়া, এই মুহূর্তে তার সৃষ্টিকর্মের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটু সময় দিন। আমরা বাবা হারিয়েছি; কিন্তু আইয়ুব বাচ্চুকে আপনারা কোনোদিন হারাবেন না। তিনি আপনাদেরই থাকবেন... অনন্তকাল... এক মৃত্যুহীন নক্ষত্র হয়ে।

১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল এলআরবি গড়ে তোলেন আইয়ুব বাচ্চু। প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন—মিল্টন আকবর, এস আই টুটুল ও সাইদুল হাসান স্বপন। মিল্টন আকবর ও এস আই টুটুল অনেক আগে ব্যান্ড থেকে সরে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন সাইদুল হাসান স্বপন। বর্তমানে তিনি দলটি পরিচালনা করছেন। হঠাৎ আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের এমন সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছেন তিনি। তার ভাষায়—পরিবারের সম্মান মানে বসের (আইয়ুব বাচ্চুর) সম্মান।

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়