ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কাফন মিছিলেও লাভ হচ্ছে না, মুক্তি পাচ্ছে বলিউড সিনেমা!

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২১, ২২ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:০৬, ২২ নভেম্বর ২০২০
কাফন মিছিলেও লাভ হচ্ছে না, মুক্তি পাচ্ছে বলিউড সিনেমা!

ফাইল ফটো

‘কাফনের কাপড় পরে রাজপথে চলচ্চিত্রকর্মীরা’—এই শিরোনামে সংবাদ দেখেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নেমেছিলেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। দেশের সবগুলো সংবাদ মাধ্যমে খবরটি ফলাও করে প্রকাশ করা হয়।

২০১৫-২০১৬ সালে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে উত্তাল ছিল চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ রাজপথ। ভিন দেশি সিনেমার পোস্টারও পুড়িয়েছিলেন তারা। ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ভারতীয় সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’। সিনেমাটি আমদানি করে ইনউইন এন্টারপ্রাইজ। এ সিনেমা ছাড়াও ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘তারে জমিন পার’ ও ‘ধুম থ্রি’ মুক্তি পায়।

উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র বাংলাদেশে প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে ঢাকাই সিনেমার নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা মানববন্ধন করেন। পাশাপাশি দেশীয় চলচ্চিত্রের সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। বিষয়টি নিয়ে মামলাও হয়। তোপের মুখে পড়ে পরবর্তীতে সিনেমা মুক্তি বন্ধ হয়। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। এবার বলিউডের সিনেমা দেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে একই দিনে মুক্তির কথা ভাবছেন হলমালিকরা। তাদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সম্মতিও দিয়েছেন সেদিন কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামা অনেকেই। তবে জুড়ে দিয়েছেন কিছু শর্ত।

আগামী তিন মাসের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে বলিউডের সিনেমা মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছেন বলে রাইজিংবিডিকে জানান হলমালিক সমিতির সহ-সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন।

মিয়া আলাউদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, হল বাঁচাতে হলে বিদেশের সিনেমা প্রয়োজন। বলিউডের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা চাচ্ছি মুক্তি পাক। এ বিষয়ে পরিচালক ও প্রযোজকরাও সম্মতি দিয়েছেন। আশা করছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব। আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি।

হল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, সিনেমা হল বাঁচাতে সিনেমা দরকার। যেহেতু আমাদের সিনেমা নেই। তাই পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় সিনেমা চালানো যেতে পারে। দর্শকের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না মিললে বলিউডের সিনেমা মুক্তি দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে সামনে থেকে আন্দোলন করেছিলেন বর্তমান চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, আমরা যখন আন্দোলন করেছিলাম তখনকার প্রেক্ষাপট ঠিক ছিল। এখন যেটা করছি সেটাও আন্দোলনের অংশ। আমরা চাই সিনেমা হলের সংস্কার হোক। নতুন সিনেমা হল তৈরি হোক। ১৪০০ সিনেমা হল থেকে এখন ১০০ সিনেমা হলও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই ৯ মাসে আমাদের সিনেমা তৈরি হয়নি। তাহলে হল কি চলবে? সিনেমা হল না থাকলে আমরাও সিনেমা বানাতে পারব না। প্রযোজকরাও সিনেমা বানাবে না। সে কারণে আমরা বলেছি, সীমিত আকারে কতগুলো বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে বলিউডের সিনেমা মুক্তি দেওয়া যেতে পারে।

বিধিনিষেধের বিষয়টি উল্লেখ করে মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, বছরে কয়টা সিনেমা মুক্তি পাবে? কখন মুক্তি পাবে এসব সিনেমা তার একটা সীমারেখা থাকতে হবে। যখন সিনেমা মুক্তি দেওয়া হবে তখন যেন দেশীয় সিনেমার কোনো ক্ষতি না হয়। আমার মতামত হলো—মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বলিউডের সিনেমা মুক্তি পাক। আমরা চাই, পাশাপাশি ই-টিকিটিং চালু হোক। এতে করে প্রযোজক নিরাপদ থাকবে। আমাদের পাওনা টাকা সিনেমা মুক্তির ১ সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করে দিতে হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো বসিনি, বসলে এসব বিষয়ে কথা বলব।

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়