ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জায়েদ-নিপুণের মধুর সম্পর্ক তিক্ত হলো যে কারণে 

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৮:৪৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিপুণ-জায়েদ খানের পারস্পরিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উত্তাপ ছড়িয়েছে। ভোট যুদ্ধের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাপিয়ে দুজনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বিষয়টিও হয়েছে আলোচিত। কিন্তু কী এমন ঘটনা যে কারণে এই দ্বন্দ্ব?

চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও নায়িকা নিপুণের সর্ম্পক এক সময় মধুর ছিল। দুজন জুটি বেঁধে কাজও করেছেন। চলচ্চিত্রে তাদের একটি গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ‘পৃথিবীর বাইরে অন্য কোথাও আজ দুজনে হারাবো, চলো পালাই’ শিরোনামের এই গানে দুজন পর্দায় কোমর দুলিয়েছেন। আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’ সিনেমায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, নিপুণের সঙ্গে জায়েদ খানের মধুর সম্পর্কের প্রমাণ মেলে ২০১৭ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পর।   

সে বছর মিশা সওদাগর সভাপতি ও জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অন্যদিকে চিত্রনায়িকা মৌসুমী কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর মৌসুমী শপথ বাক্য পাঠ করেননি। এর কিছুদিন পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সদস্যপদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। সেই শূন্য পদে চিত্রনায়িকা নিপুণকে নেন জায়েদ খান। নিপুণকে নিয়ে দুই বছর সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে মিশা-জায়েদের কমিটি। এ ঘটনা থেকে দুজনের পারস্পরিক হৃদ্যতার ধারণা পাওয়া যায়। 

কিন্তু হঠাৎ করেই দুজনের মধুর সম্পর্কে নেমে আসে তিক্ততা। গত বছর করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে নিপুণ নিজ উদ্যোগে সাইমন সাদিককে নিয়ে চলচ্চিত্রের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। জায়েদ খানও এ সময় সংগঠনের সদস্যদের প্রতি সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেন। ধারণা করা হয়, নিপুণ সে সময় থেকেই চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিষয়টি বুঝতে পারেন জায়েদ খানও। এ থেকেই দুজনের সম্পর্কে ফাটলের সূত্রপাত। 

সর্বশেষ এবার নির্বাচনে নিপুণ প্রথমে শাকিব খানকে নিয়ে প্যানেল করতে চেয়েছিলেন। শাকিব সাড়া দেননি। পরে তিনি নন্দিত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বেছে নেন। অন্যদিকে জায়েদ খান-মিশা সওদাগর প্যানেল অটুট থাকে। এবং এই নির্বাচনে নিপুণ-জায়েদ খানের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। এবং দুজনের আচরণ প্রমাণ করে দেয়, এই বিরোধ শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই ছিল না,  এর শেকড় আরো পেছনে। 

নির্বাচনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে শিল্পীদের টাকা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন নিপুণ। বিষয়টি সত্য-মিথ্যা এখনও প্রমাণিত হয়নি। যদিও শেষ পর্যন্ত জায়েদ খানের কাছে তিনি ১৩ ভোটে হেরে যান। এরপর কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনরায় গণনার জন্য আপিল করেন এই চিত্রনায়িকা। এখানেও তার পরাজয় ঘটে।  অর্থাৎ মুখে চলচ্চিত্রের মানুষগুলো যতোই বলুক ‘নির্বাচন শেষে আমরা সবাই এক’ কাজে এর প্রমাণ দেননি নিপুণ। সর্বশেষ  জায়েদ খানও হুমকি দিয়েছেন তাকে যেভাবে সামাজিকভাবে হেয় করা হচ্ছে তাতে তিনি মামলা করবেন। শুধু তাই নয়, মামলায় এক নম্বর আসামি করবেন নিপুণকে- গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জায়েদ খান। 
স্বাভাবিক কারণে বোঝাই যাচ্ছে নিপুণ-জায়েদ সম্পর্ক এখন আর মধুর নেই, সাপে-নেউলে পরিণত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো- এর শেষ কোথায়? 

সদ্য নির্বাচিত শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন সর্বজনপ্রিয়। তিনি শিল্পী সমিতির অভিভাবক। তিনিই পারেন নিপুণ-জায়েদ খানের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দিতে। চলচ্চিত্রপ্রেমীরা এমনটাই মনে করছেন।   
 

/তারা/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়