ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সিনেমা থেকে বাদ, ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়ে অকপট মাহিমা

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ০৮:৩৮, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
সিনেমা থেকে বাদ, ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়ে অকপট মাহিমা

বলিউড অভিনেত্রী মাহিমা চৌধুরী। নব্বই দশকের শেষ লগ্নে রুপালি জগতে পা দিয়েই রাতারাতি তারকা বনে যান এই অভিনেত্রী। কিন্তু অভিষেকের পরই একের পর এক সিনেমা থেকে বাদ পড়তে থাকেন মাহিমা। এখানেই শেষ নয়, মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনার কবলেও পড়েছিলেন। পুরোনো সেই সব ঘটনা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন মাহিমা চৌধুরী।  

সিদ্ধার্থ কানানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মাহিমা চৌধুরী। এ আলাপচারিতায় অভিনেত্রী জানান, চুক্তি সংক্রান্ত বিভ্রান্তির কারণে তাকে ভয়াবহভাবে পেশাগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

মাহিমা চৌধুরী বলেন, “অনেক কিছুই হয়েছে। আমার প্রথম সিনেমার পর আমাকে কোর্টে নেওয়া হয়েছিল। অনেক সিনেমা থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, আমি মুক্তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, যা সত্যি ছিল না। তারপর আমি দুর্ঘটনার কবলে পড়ি। আমি এক বছর বাড়িতেই বসে ছিলাম।”

বিরতি কাটিয়ে মাহিমা যখন কাজে ফিরেন, তখন তাকে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিতে শুরু করেন নির্মাতারা। এ বিষয়ে মাহিমা চৌধুরী বলেন, “আমি তখন ছোটখাটো চরিত্রে কাজ করতে শুরু করি। আর সেই সব সিনেমা হিট হয়ে যায়। এমনকি, শুধু একটা গানের দৃশ্যেও অভিনয় করতাম। এরপর আমাকে শুধু একটি গানের জন্য প্রস্তাব দিতে শুরু করে, পরে আমি সেগুলো ‘না’ করে দিই। আমাকে ‘লাকি ম্যাসকট’ বলা হতো। কিন্তু আমি আরো অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম।”

‘দিল কেয়া করে’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়ে মাহিমা চৌধুরী মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে মুখে গুরুতর আঘাত পান এই অভিনেত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার মুখে ৬৭টি ছোট কাচের টুকরো ঢুকে গিয়েছিল, মাইক্রোস্কোপের সাহায্য নিয়ে এসব বের করতে হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরের দিন মুখ আরো ফুলে যায় এবং বিকৃত দেখাচ্ছিল। আমার মুখের আঘাত দেখে বন্ধুরা হাসছিল, ওরা ভেবেছিল আমি কারো সঙ্গে ঝগড়া করেছি এবং মিথ্যা বলছি। সেই সময় আমি জানতাম না জীবনে কী করব, খুব কঠিন সময় ছিল। রোদে বেরোতে পারতাম না, সেলাই কাটার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল।”

১৯৯৯ সালের দিকে প্রকাশ ঝা পরিচালিত ‘দিল ক্যায়া করে’ সিনেমার শুটিং করছিলেন মাহিমা। এটির প্রযোজক ছিলেন অজয় দেবগন ও কাজল। স্টুডিওতে যাওয়ার পথে বেঙ্গালুরুতে হঠাৎই একটা ট্রাক মাহিমার গাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে। এত জোরে ধাক্কা লেগেছিল যে গাড়ির কাচ ভেঙে বেশিরভাগই অভিনেত্রীর মুখ ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।

২০২০ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহিমা বলেছিলেন, “আমার মনে হচ্ছিল মারা যাব। ওই সময় কেউ আমাকে সাহায্যও করছিল না। পরবর্তীতে হাসপাতালে পৌঁছানোর অনেক পর মা ও অজয় আসে। অস্ত্রোপচারের পর আমার মুখমন্ডল থেকে ৬৭টি কাচের টুকরো বের করেছিল। কথাগুলো যখন বলি আমার কান্না পায়। আমার মুখমন্ডলে সেলাই, স্ট্যাপল করা ছিল এবং ঘরের মধ্যে থাকতে হয়েছে। আমার ঘর সবসময় অন্ধকার থাকত। নিজেকে দেখতাম না। সূর্যের আলোতে বের হওয়া বাড়ন ছিল। অতিবেগুনি রশ্মি রয়েছে এমন আলোতে যাওয়া নিষেধ ছিল।”

১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরদেশ’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে মাহিমা চৌধুরীর। সুভাষ ঘাই পরিচালিত এ সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন শাহরুখ খান। পরবর্তীতে ‘দাগ: দ্য ফায়ার’, ‘পেয়া কই খেল নেহি’, ‘দিওয়ানে’, ‘কুরুক্ষেত্র’ এর মতো অনেক সিনেমায় অভিনয় করেন মাহিমা।

চলতি বছরে মাহিমা চৌধুরী অভিনীত দুটো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তি পায় ‘ইমার্জেন্সি’, ৭ মার্চ মুক্তি পায় ‘নাদানিয়া’ সিনেমা। বর্তমানে তার হাতে ‘দুর্লভ প্রসাদ কি দুসরি শাদি’ সিনেমার কাজ রয়েছে। রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার এ সিনেমা নির্মাণ করছেন সিদ্ধান্ত রাজ।

এ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সঞ্জয় মিশ্রা। ববিতা চরিত্রে দেখা যাবে মাহিমা চৌধুরীকে। তাছাড়াও অভিনয় করেছেন—শ্রীকান্ত ভার্মা, পলক লালওয়ানি, নবনী প্রমুখ। আগামী ১৯ ডিসেম্বর সিনেমাটি মুক্তির কথা রয়েছে। 

ব্যক্তিগত জীবনে মাহিমা বিয়ে করেছেন আর্কিটেক্ট ববি মুখার্জিকে। ২০০৬ সালে বিয়ে করেন তারা। এ সংসারে তাদের আরিয়ানা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৩ সালে ভেঙে গেছে মাহিমা-ববির সংসার। এরপর কন্যাকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন এই অভিনেত্রী। 

তথ্যসূত্র: টাইমস নাউ

ঢাকা/শান্ত

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়