প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুঘু
মহাসিন || রাইজিংবিডি.কম
জোড়া ঘুঘুর ছবি
মহাসিন আলী
মেহেরপুর, ৯ মে : বাংলাদেশের অতি পরিচিত পাখির মধ্যে ঘুঘু অন্যতম। এই পাখি নিয়ে যেমন রয়েছে প্রবাদ বাক্য, তেমনি রয়েছে নানা গল্প।
পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে আজ এ পাখি হারিয়ে যেতে বসেছে। এ পাখি সংরক্ষণ করা না গেলে আরো কয়েক বছর পরে আমাদের নতুন প্রজন্ম বর্ণমালা শিখতে শুধু বইয়ের পাতায় পড়বে ঘ-তে ঘুঘু পাখি দিচ্ছে ডাক অথবা ঘুঘু করে ঘুঘু। আর শিশুকে সত্যিকারের ঘুঘু পাখি দেখাতে মাঠ-ঘাটে নয় অভিভাবককে শিশুদের নিয়ে যেতে হবে চিড়িয়াখানায়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে পরিবেশও। মানুষও হয়ে যাচ্ছে স্বার্থপর আর নিষ্ঠুর। মানুষের স্বার্থপরতা আর নিষ্ঠুরতার কাছে আমাদের অতি পরিচিত ঘুঘু পাখি হারাতে বসেছে।
এখন আর মাঠে-ঘাটে ঘুঘু পাখি দেখা যায় না। শোনা যায় না ঘুঘু পাখির ডাক। কেউ ভাগ্যক্রমে ঘুঘু পাখি দেখে ফেললে সেটা গল্পতে রূপ নেয়। ঘুঘু পাখি দেখা মেলা দুর্লভ। তাই এখন আর কেউ রাগে-ক্ষোভে কাউকে বলে না- ‘তোর ভিটায় ঘুঘু চরাবো।’ এক সময় বাংলার মাঠে-ঘাটে ঘুঘু পাখি ছিলো ভরি ভরি। প্রকৃতিতে অবাধ বিচরণ ছিলো তাদের। পিঁপড়ার উপকারী বন্ধু হিসেবে ঘুঘু পাখির গল্প বইয়ে পড়েনি এমন শিক্ষার্থী সে সময় খুঁজে পাওয়া ভার ছিলো।
নিষ্ঠুর পাখি শিকারীর টোটার গুলি আর ফাঁদ যখন পরিবেশ থেকে আস্তে আস্তে ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি হারিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখন সরকার আইন করে পাখি শিকার নিষিদ্ধ করে। তারপরও কি ঘুঘু প্রাণে রক্ষা পেয়েছে?
ঘুঘুর প্রধান খাদ্য ধান, গম ও ডাল বীজ জাতীয় খাদ্য। আমাদের কৃষকরা সচেতনতার পরিচয় না দিয়ে তারা ফসল উৎপাদনে খেতে মাত্রা অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিষ মিশ্রিত খাদ্য খেয়ে ঘুঘুসহ কয়েক প্রজাতির পাখি প্রকৃতি থেকে উজাড় হচ্ছে।
পাখিপ্রেমী মিজান জানালেন, ঘুঘু পাখির জন্য নিরাপদ খাদ্যের যেমন অভাব, তেমনি নিরাপদ বাসস্থানের অভাব দেখা দিয়েছে। মাঠের খাদ্যে বিষ! চোরা শিকারীর কারণে গাছে বসা নিরাপদ নয়, তবে কিভাবে তারা প্রকৃতিতে টিকে থাকবে?
রাইজিংবিডি.কম