ফেরদৌসের ‘এই কাহিনী সত্য নয়’ নিয়ে প্রকাশনার অভিযোগ

এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের বই ‘এই কাহিনী সত্য নয়’। প্রথমা প্রকাশন থেকে বইটি প্রকাশ হলেও আরেক সংস্থা (বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড) দাবি করেছে, চিত্রনায়ক ফেরদৌস তাদের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছেন।
বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড দাবি করছে, ২০১৬ সালে তাদের দেওয়া গোস্ট রাইটার দিয়ে বই লিখিয়েছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। শর্ত ছিল, এই প্রকাশনী থেকেই বইটি প্রকাশ করা হবে। তবে চলতি বছর সেই লেখার কিছু পরিবর্তন করে ফেরদৌস আহমেদ প্রথমা প্রকাশন থেকে বইটি বের করেছেন।
বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড জানায়, ২০১৬ সালে ফেরদৌস বই প্রকাশের বিষয়ে তাদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করেন। তার নিজে লেখার মত যথেষ্ট সময় ছিল না। এজন্য ফেরদৌসের অনুরোধেই মৌখিক কাহিনীকে উপন্যাসে রূপদানে গোস্ট রাইটার আল মামুন সোহাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফেরদৌস গোস্ট রাইটারের পারিশ্রমিক পরিশোধেরও দায়িত্ব নেন। তবে পরবর্তীতে তিনি পারিশ্রমিক দেননি।
অভিযোগ করে বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড’র নির্বাহী প্রধান পারভেজ রানা বলেন, চিত্রনায়ক ফেরদৌস প্রথমত আমাদের সাথে প্রতারণা করছেন। দ্বিতীয়ত, প্রথমা-ও আমাদের সাথে প্রতারণা করছে। কারণ, প্রথমা বিষয়টির মধ্যে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে ক্ষতিপূরণও দিতে চায়। কিন্তু এরপর কেন দিলো না, সেটা তারাই জানে। আর বইমেলায় প্রকাশ হওয়ার পর আমরা তাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছি। যখন বুঝতে পারলাম সময়ক্ষেপণ করছে, তখন লিখিত জানালাম যেন প্রমাণ থাকে। আর ফেরদৌস কম্পোজের বিল দিতে চায়। এটা তো টাইপ রাইটারের কাজ না, গোস্ট রাইটার করেছেন। এরওপর ২০১৬ ও ২০১৭ সালের সময়, টাকা নষ্ট করলো। আমরা গোস্ট রাইটারের বিল পরিশোধ করলাম। প্রত্যেকের সময়েরই দাম আছে।
গোস্ট রাইটার আল মামুন সোহাগ বলেন, ২০১৬ সালে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে পারভেজ রানার সাথে পরিচয়। নেপথ্যে চিত্রনায়ক ফেরদৌসে বই। প্রকাশক আমাকে ফেরদৌসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ফেরদৌস ২-৩ ঘণ্টা করে তিন দিন সময় দেন। মুখে মুখে গল্প বলেন। আমি মোবাইলে রেকর্ড করে নিই। সেটা ছিল তার চোখের সামনে ঘটা কিছু ঘটনা। তার আলোকে তিনি কিছু কল্পনার আশ্রয় নিয়ে গল্প সাজাতে বলেন। আমাকেও বলেন, সামঞ্জস্যতা রেখে প্রয়োজনে ঘটনা যুক্ত করতে। সেই অনুযায়ী কাহিনী লিখে উপন্যাসে রূপ দিই। আমি জানতাম, রাইটার্স গিল্ড থেকে উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশ হবে। প্রকাশক আমাকে কাজের সম্মানীও দেন। পরে জানতে পারি, লেখা ফেরদৌসের পছন্দ না হওয়ায় তিনি বই প্রকাশে আগ্রহ হারিয়েছেন। ২০২৩ সালে প্রথমা থেকে ‘এই কাহিনী সত্য নয়’ ফেরদৌস রচিত উপন্যাস প্রকাশিত হলে আমি সংগ্রহ করে পড়ে দেখি প্রায় আমার লেখাটিই এটি।
প্রথমা প্রকাশন’র প্রধান নির্বাহী জাভেদ হোসেন জানান, আমাদের কাছে পাণ্ডুলিপি আসছে, সেটা ছেপেছি। পরবর্তীতে উনারা যখন অভিযোগ করেছে, আমার সেটা লেখককে জানিয়েছি। এরপর লেখক ও প্রকাশকের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, যখন এটা শুরু করেছিলাম, প্রথম দিকে তারা কয়েক পৃষ্ঠা টাইপ করে দিয়েছেন। আমি তো হাতে লিখি, সেটা ওরা টাইপ করে দিয়েছিল। তা-ও সেই ২০১৬ সালে। আমি বলেছিলাম, সে ছেলেটা টাইপ করছে তাকে পাঠিয়ে দেন; যা খরচ হয়েছে আমি দিয়ে দেবো। এ ছাড়া, বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ডের সাথে কোনও চুক্তি করিনি।
রায়হান/এনএইচ
আরো পড়ুন