ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২ ১৪৩১

ভারতীয় গণমাধ্যম যেভাবে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার খবর প্রচার করছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪২, ১০ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২২:৪৩, ১০ আগস্ট ২০২৪
ভারতীয় গণমাধ্যম যেভাবে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার খবর প্রচার করছে

ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে শুরু করে- বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুরা ‘ইসলামী বাহিনীর’ লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। ওই দিন থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বিষয়বস্তু সম্বলিত নিবন্ধ এবং ভিডিও প্রচার শুরু হয়।

টাইমস গ্রুপের মালিকানাধীন মিরর নাউ-এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিওর শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা? গণহত্যা, সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে হত্যা’। ওই ভিডিওতে চারটি বাড়িতে সহিংসতা এবং অগ্নিসংযোগের ফুটেজ দেখানো হয়। পরে দেখা যায়, এই বাড়িগুরোর দুটি মুসলমানদের মালিকানাধীন। ভিডিওটির শিরোনাম স্পষ্টতই বিভ্রান্তিকর ছিল। কারণ এই ঘটনায় কোনো গণহত্যার খবর পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওটিতে আরও দাবি করা হয়, জনতা ২৪ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং ‘আক্রমণের কেন্দ্রে সংখ্যালঘুরা।’ এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি ভিডিওতে।

আল জাজিরা স্বাধীনভাবে যাচাই করেছে যে সোমবার হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দুজন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে – একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন আওয়ামী লীগের কর্মী।

নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের জবাই করা হচ্ছে, এক কোটিরও বেশি শরণার্থী শিগগিরই পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করতে পারে।’

মোদির সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সংবাদ সংস্থা এএনআই ভারতের একজন ছাত্র নেতাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, গণ-অভ্যুত্থান ‘বাংলাদেশের শত্রুদের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছিল।’

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার আরও একটি  উদ্ভট নিবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামী ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারকে ধ্বংস করেছে।’

টিভি চ্যানেল টিভি৯ গুজরাটি  এক্স- এ লিখেছে, ‘বাংলাদেশে অভ্যুত্থান হামলার পিছনে কি আইএসআই রয়েছে? জামায়াতে ইসলামী কি সহিংস হামলার পেছনে?’

দ্য ইকোনমিক টাইমস-এর কূটনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক দীপাঞ্জন আর চৌধুরী, এক্স-এ পোস্ট করেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী দেশ বা ভারতের জন্য ভালো নয়। সীমান্ত সন্ত্রাসের প্রচারের জামায়াতের ট্র্যাক রেকর্ড সাম্প্রতিক ইতিহাসের অংশ।’

শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে দক্ষিণ কর্ণাটক অঞ্চলের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি এম.বি. পুরাণিক বলেছেন, ‘জিহাদি বাহিনী’ বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে পতন ঘটিয়েছে।
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়