ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ট্রাম্পের সফর: ইসরায়েলের সাথে সৌদি সম্পর্কের সম্ভাবনা অধরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ১১ মে ২০২৫  
ট্রাম্পের সফর: ইসরায়েলের সাথে সৌদি সম্পর্কের সম্ভাবনা অধরা

এক ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের বার্তা দিয়ে মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সৌদি আরবে স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু, গাজায় চলমান যুদ্ধ তাকে দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত একটি লক্ষ্য থেকে বঞ্চিত করেছে: সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ।

সরকারি মহলের ঘনিষ্ঠ দুটি উপসাগরীয় সূত্র এবং একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পর্দার আড়ালে মার্কিন কর্মকর্তারা চুপচাপ ইসরায়েলকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য সৌদি আরবের পূর্বশর্তগুলোর মধ্যে এটি একটি।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসে জানিয়েছিলেন, তিনি আব্রাহাম চুক্তি সম্প্রসারণের বিষয়ে শিগগিরই অগ্রগতি আশা করছেন। এই আব্রাহাম চুক্তি ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মধ্যস্থতা করেছিলেন। এর অধীনে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান এবং মরক্কোসহ আরব রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, “আমরা মনে করি খুব শিগগিরই আমাদের কিছু বা অনেক ঘোষণা আসবে, যা আমরা আশা করি আগামী বছরের মধ্যে অগ্রগতি অর্জন করবে।”

দুটি সূত্র জানিয়েছে, স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ বা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সৌদি আরবের অনুরূপ আলোচনায় অগ্রগতি অসম্ভব।

সৌদি আরব ইসরায়েলকে বৈধ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যের দুটি সবচেয়ে উন্নত অর্থনীতি ও সামরিক শক্তির সাথে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সমর্থকরা বলছেন, ইসরায়েল ও সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি আনবে, একই সাথে ইরানের প্রভাবকে প্রতিহত করবে।

সাবেক মার্কিন আলোচক ডেনিস রস বলেন, সৌদি আরবের কার্যত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, ‘সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ইস্যুতে পুনরায় জড়িত হওয়ার আগে’ গাজা যুদ্ধের অবসান এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পথ খুঁজে বের করতে চান।

ছয়টি সূত্রের মতে, ইতিমধ্যে ওয়াশিংটন ও রিয়াদ ট্রাম্পের সফরে মূলত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং অন্যান্য আঞ্চলিক বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করেছে। অস্ত্র, মেগা-প্রকল্প এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো লোভনীয় বিনিয়োগ কার্যকরে উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা জোর দিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের ঘোষিত লক্ষ্য হল মার্কিন কোম্পানিগুলোতে ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইতিমধ্যে মার্কিন কোম্পানিগুলোতে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক ধনী রাজ্যটি এই রীতিটি ভালভাবে জানে: অতিথিকে চমকে দিন, অনুগ্রহ নিশ্চিত করুন। সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, লক্ষ্য হলো কূটনৈতিক ল্যান্ডমাইন এড়ানো এবং কেউ কেউ বলেছে, গাজা যুদ্ধ ও তার পরবর্তী পরিণতি সম্পর্কে ট্রাম্পের কাছ থেকে ছাড় পাওয়া।

ওয়াশিংটনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রেসিডেন্ট স্কলার রবার্ট মোগিয়েলনিকি বলেছেন, “ট্রাম্প প্রশাসন চায় এই সফরেএকটি বড় চুক্তি হোক। এর অর্থ হল প্রচুর ঝাঁঝালো চুক্তির ঘোষণা এবং সহযোগিতা যা আমেরিকার জন্য ভালো বলে বিক্রি করা যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে বিনিয়োগ চুক্তি ঘোষণা করার চেয়ে অনেক বেশি ভারী হচ্ছে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।”

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র সফরের আগে কোনো সমঝোতা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প “সফরের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের আরব উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করবেন।”

সৌদি সরকারের যোগাযোগ অফিস মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
 

ঢাকা/শাহেদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়