ওয়াশিংটনে বন্দুক হামলায় নিহত ২ দূতাবাস কর্মীর নাম জানাল ইসরায়েল

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাস ওয়াশিংটনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই দূতাবাস কর্মীর নাম প্রকাশ করেছে। নিহতরা হলেন- ইয়ারন এবং সারাহ, তারা কাপল ছিলেন। এ সপ্তাহেই তাদের বাগদান হওয়ার কথা ছিল।খবর বিবিসির।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাদের পুরো নাম ইয়ারন লিশিনস্কি এবং সারাহ মিলগ্রাম।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘এক্স’-এ দূতাবাসের একটি পোস্টে বলা হয়, “নিহতরা ‘তাদের জীবনের সেরা সময়ে ছিলেন’। স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৯:০৫ মিনিটের দিকে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে আসার সময় একজন সন্ত্রাসী তাদের গুলি করে হত্যা করে।”
দূতাবাস বলেছে, “এ ঘটনায় দূতাবাসের কর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং তারা বিধ্বস্ত।”
পোস্টে আরো বলা হয়, “এই ভয়াবহ ক্ষতিতে আমাদের শোক ও ভয়াবহতার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের হৃদয় তাদের পরিবারের সাথে আছে এবং এই ভয়াবহ সময়ে দূতাবাস তাদের পাশে থাকবে।”
এদিকে, ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন একমাত্র ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ। শিকাগোর ৩০ বছর বয়সী এলিয়াস রদ্রিগেজকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করার পর তাকে দ্রুত আটক করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, হেফাজতে নেওয়ার সময় রদ্রিগেজ ‘‘ফিলিস্তিন মুক্ত করুন’ বলে বারবার স্লোগান দেন।
ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান পামেলা স্মিথ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, সন্দেহভাজন এলিয়াস রদ্রিগেজকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় তিনি ইঙ্গিত দেন যে, রদ্রিগেজ অপরাধটি করেছেন।
এদিকে ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলি প্রতিনিধি এবং কূটনৈতিক মিশনগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি বলেন, “আমার হৃদয় সেই প্রিয় যুবক এবং নারীর পরিবারের জন্য ব্যাথা করছে, যাদের জীবন একজন জঘন্য ইহুদি-বিদ্বেষী খুনির দ্বারা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।”
নেতানিয়াহু আরো বলেন, “আমরা ইহুদি-বিদ্বেষ এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বর্বর উস্কানির ভয়াবহ মূল্য প্রত্যক্ষ করছি।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ড, স্পষ্টতই ইহুদি-বিদ্বেষের উপর ভিত্তি করে তৈরি, এটি এখনই বন্ধ করতে হবে! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণা ও মৌলবাদের কোনো স্থান নেই।
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন, ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লেইটার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির মাধ্যমে তাকে ফোন করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার প্রশাসন ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই এবং এটি শেষ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।”
এসময় লেইটার ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্যের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “একসাথে আমরা ভয় পাব না। একসাথে আমরা দাঁড়াব এবং আমরা সেইসব লোকদের নৈতিক অবক্ষয় কাটিয়ে উঠব যারা মনে করে যে তারা হত্যার মাধ্যমে রাজনৈতিক লাভ অর্জন করবে।”
ঢাকা/ফিরোজ