ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাশিয়ায় পৌঁছেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ৬ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৫:৫৩, ৬ আগস্ট ২০২৫
রাশিয়ায় পৌঁছেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে রাশিয়াকে দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বুধবার (৬ আগস্ট) মস্কোয় পৌঁছেছেন। 

মস্কোর ভনুকোভো বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী এবং রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ। খবর ফ্রান্স টুয়েন্টিফোরের। 

আরো পড়ুন:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে আগেই বলেছেন, শুক্রবারের (৮ আগস্ট) মধ্যে মস্কো যদি ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয়, তাহলে রাশিয়াকে নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে। এই পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে যেসব দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে, তাদের ওপর ভারী শুল্ক আরোপ করা হবে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো ভারত ও চীন।

তবে ট্রাম্প এটাও বলেছিলেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য আরো একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় উইটকফ এই সপ্তাহে মস্কো ভ্রমণ করতে পারেন।

চলতি বছর এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো রাশিয়া সফর করছেন মার্কিন এই বিশেষ দূত। এর আগে এপ্রিল মাসে তিনি দুইবার মস্কো সফর করেন এবং সেই সময় তিনি পুতিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন।

উইটকফের এবারের সফরের গুরুত্বের ইঙ্গিত দিয়ে ক্রেমলিনও ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। মঙ্গলবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে উইটকফের বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তবে ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার আল্টিমেটামের কাছে পুতিনের মাথা নত করার সম্ভাবনা কম। কারণ তিনি ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে দখলের লক্ষ্য ধরে রেখেছেন।

ক্রেমলিনে আলোচনার সাথে পরিচিত তিনটি সূত্রের মতে, রাশিয়া জয়লাভ করছে বলে পুতিনের বিশ্বাস। সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধে অর্থনৈতিক শাস্তির ধারাবাহিক ঢেউয়ের পরে বিশ্বে আরো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে এমন সন্দেহ থেকেই পুতিনের এই পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার দৃঢ় সংকল্প উদ্দীপিত হয়েছে।

দুটি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার নেতা ট্রাম্পকে রাগাতে চান না এবং তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি ওয়াশিংটন ও পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করছেন। তবে এর মধ্যেও তার যুদ্ধের লক্ষ্যগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, পুতিনের লক্ষ্য হলো ইউক্রেনীয় অঞ্চল দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন সম্পূর্ণরূপে দখল করা, যেগুলোকে রাশিয়া নিজেদের বলে দাবি করেছে এবং তারপর একটি শান্তি চুক্তি নিয়ে কথা বলা।

‘দ্য রিটার্ন অব রাশিয়া’-এর লেখক জেমস রজার্স বলেছেন, “পুতিন যদি রাশিয়ার জন্য দাবি করা চারটি অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে দখল করতে সক্ষম হন, তাহলে তিনি দাবি করতে পারেন যে ইউক্রেনে তার যুদ্ধ তার লক্ষ্যে পৌঁছেছে।”

প্রথম রুশ সূত্রটি জানিয়েছে, পুতিন মার্কিন সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবনতি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। পুতিন এখনো আশাবাদী যে রাশিয়া আবার আমেরিকার সাথে বন্ধুত্ব করতে এবং পশ্চিমাদের সাথে বাণিজ্য করতে পারবে।

মস্কোর বাহিনী প্রবল সামরিক চাপের মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্র এবং ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে। তাই পুতিন বিশ্বাস করেন না যে এখন যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে।

লেখক রজার্স জানিয়েছেন, পুতিন তার রাজনৈতিক খ্যাতি এবং উত্তরাধিকার ইউক্রেনের যুদ্ধে বিনিয়োগ করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা তার পূর্ববর্তী লেখা ও বিবৃতি থেকে জানি যে তিনি রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষার জন্য পশ্চিমা এবং বিশ্বের বাকি অংশের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর একটি শক্তিশালী ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে নিজেকে দেখেন।”

দ্বিতীয় রাশিয়ান সূত্রটি জানিয়েছে, “ক্রেমলিন নেতা ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেন এবং তাকে রাগাতে চান না, তবে, তার কেবল একটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার রয়েছে - ট্রাম্প কেবল এটি চান বলেই পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন না।”

অস্ট্রিয়ান বিশ্লেষক গেরহার্ড ম্যাঙ্গোটের মতে, “উইটকফের এই সফর উভয় পক্ষের জন্য একটি মুখ রক্ষাকারী সমাধান খুঁজে বের করার শেষ প্রচেষ্টা। তবে, আমি মনে করি না যে উভয়ের মধ্যে কোনো আপস হবে।“ 

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়