ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাখাইনে বিপর্যয়কর মাত্রায় অনাহার বাড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ১ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৯:২২, ১ অক্টোবর ২০২৫
রাখাইনে বিপর্যয়কর মাত্রায় অনাহার বাড়ছে

গত বছর মিয়ানমারের যুদ্ধবিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যে আজিব বাহারের ছয় মাস বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ৩৮ বছর বয়সী এই রোহিঙ্গা মা জানান, সন্তানকে দেওয়ার জন্য তার কাছে কোনো ওষুধ বা খাবার ছিল না। ছেলেটি তার কোলেই মারা যায়।

বাংলাদেশের কক্সবাজারের একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বাহার বলেন, “আমার বাচ্চারা সারা রাত ক্ষুধার জ্বালায় কেঁদেছিল। আমি ঘাস সিদ্ধ করে তাদের চুপ করিয়ে দিয়েছিলাম।”

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মতে, পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল রাখাইন রাজ্য বছরের পর বছর ধরে সংঘাত এবং জাতিগত সহিংসতার শিকার হয়েছে। ‘সংঘাত, অবরোধ এবং তহবিল হ্রাসের মারাত্মক সংমিশ্রণের কারণে’ এখন ‘উদ্বেগজনক’ অনাহার সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।

২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে এবং বিক্ষোভ দমনের উপর নির্মমভাবে দমন-পীড়নের পর থেকে মিয়ানমার সংকটে রয়েছে। এর ফলে দেশব্যাপী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয় এবং রাখাইনে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা জান্তা এবং একটি শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী, আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের নতুন পথ খুলে দিয়েছে।

ত্রাণ কর্মীদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, রাখাইনে এক লাখেরও বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে, যার মধ্যে ২ শতাংশেরও কম চিকিৎসা পেতে সক্ষম।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মাইকেল ডানফোর্ড জানিয়েছেন, জান্তা ও আরাকান সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ভীতি এবং বিধিনিষেধের কারণে জাতিসংঘ জান্তা-নিয়ন্ত্রিত রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ের বাইরে রাখাইনের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে খাদ্য পরিবহন করতে পারছে না।

তিনি বলেছেন, “এটি স্পষ্টতই অনাহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অবদান রাখছে যা আমরা দেখছি। আমরা অত্যন্ত হতাশ, কারণ আমরা জানি যে এমন কিছু জনগোষ্ঠী আছে যাদের আমাদের সহায়তার প্রয়োজন।”

আরাকান আর্মির একজন মুখপাত্র খিন থু খা জানান, জান্তা খাদ্য ও ওষুধ সহ সাহায্যের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং তারা জাতিসংঘ এবং সাহায্য সংস্থাগুলার সাথে সহযোগিতা করছে।

আরাকান আর্মির তথ্য অনুসারে, প্রতি চারজনের মধ্যে একটি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে কিন্তু এখনো দুর্ভিক্ষের মাত্রায় পৌঁছায়নি। তিনি সামরিক অবরোধকে দায়ী করেন। 

মুখপাত্র খিন থু খা জানান, সংঘাতের কারণে চিকিৎসা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু আরাকান আর্মি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যতটা সম্ভব কম রাখার এবং কর কমানোর চেষ্টা করছে।

মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর একজন মুখপাত্র মন্তব্যের জন্য অনুরোধের জবাব দেননি।

ঢাকা/শাহেদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়