ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শান্তিতে নোবেলজয়ী কে এই মাচাদো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ১০ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৭:৩০, ১০ অক্টোবর ২০২৫
শান্তিতে নোবেলজয়ী কে এই মাচাদো

নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো

শান্তিতে এ বছর (২০২৫) নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।

আরো পড়ুন:

নোবেল কমিটি যা জানাল
ভেনেজুয়েলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং দেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণে তার নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হলো।

নোবেল কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কর্তৃত্ববাদীরা যখন ক্ষমতা দখল করে, তখন স্বাধীনতার পক্ষে লড়া সাহসীদের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যারা রুখে দাঁড়ায় এবং প্রতিরোধ করে।’

মঙ্গলবার ছিল তার জন্মদিন
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ছিল তার জন্মদিন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) পেলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার।

‘লৌহ মানবী’ এখন আত্মগোপনে
৫৮ বছরের মারিয়া ভেনেজ়ুয়েলার ‘লৌহ মানবী’ বলে পরিচিত। তার মা ছিলেন মনস্তত্ত্ববিদ। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ২০১৩ সালে ভেনেজুয়েলায় উদার রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়, যার নাম ‘ভেন্টে ভেনেজুয়েলা’। সেই দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মারিয়া। তিনি বিবাহিত। তিন সন্তান রয়েছে তার।

আত্মগোপনে থেকেও গণতন্ত্রের পক্ষে প্রচার
মারিয়া কোরিনা মাচাদো আত্মগোপনে থেকেও গণতন্ত্রের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশ ছাড়তে অস্বীকার করেছেন। এ বছরের জানুয়ারিতে তিনি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এক বিক্ষোভে দেখা দেন, পরে তাকে গ্রেপ্তার করে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।

গত বছর ভেনেজুয়েলায় ভোটের সময় কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় দেশের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন নিকোলাস মাদুরো। তার দলের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি করার অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই অভিযোগ যারা তুলেছিলেন, তাদের সামনের সারিতে ছিলেন মারিয়া। সেজন্য মারিয়াকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এক বার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি।

এরপরও মারিয়াকে দমানো যায়নি। ২০২৪ সালের ভোটে মারিয়াকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শামিল হতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ছিল। তবে দেশবাসী মনে করেন, আসল বিজয়ী মারিয়াই। সে কারণে নোবেল কমিটি তার নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বলে, “মারিয়া হলেন ‘সাহসী এবং শান্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চ্যাম্পিয়ন’। ভেনেজুয়েলায় যখন ‘অন্ধকার’ তখনও গণতন্ত্রের আগুন জ্বালিয়ে রেখেছিলেন মারিয়া।”

কে এই মাচাদো
১৯৬৭ সালে জন্ম নেওয়া এই নারী গণতন্ত্রের লড়াইয়ে দেশের এক পরিচিত মুখ। রাজনৈতিক দমননীতি, হুমকি, এমনকি বহিষ্কার-সবকিছু সয়ে তিনি টিকে আছেন নিজের বিশ্বাসে।

মারিয়া পড়াশোনা করেছেন প্রকৌশল ও অর্থনীতিতে। ব্যবসায়িক জীবনে স্বল্প সময় কাজ করার পর ১৯৯২ সালে তিনি কারাকাসে পথশিশুদের জন্য ‘আতেনেয়া ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। তার লক্ষ্য ছিল সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানো।

এর দশ বছর পর তিনি ‘সুমাতে’ নামের এক সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হন। এই সংগঠন মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে এবং ভোটার প্রশিক্ষণ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ চালায়।

২০১০ সালে মাচাদো নির্বাচনে অংশ নিয়ে রেকর্ড ভোটে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালে সরকার তাকে বহিষ্কার করে। তবু থেমে যাননি তিনি। এখন তিনি বিরোধী দল ‘ভেন্তে ভেনেজুয়েলা’-এর নেতা। ২০১৭ সালে তিনি ‘সয় ভেনেজুয়েলা’ নামে নতুন এক জোট গঠন করেন, যা গণতন্ত্রপন্থী সব পক্ষকে একত্র করেছে।

২০২৩ সালে মাচাদো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু সরকার তাকে প্রার্থী হতে বাধা দেয়। পরে তিনি বিরোধী দলের বিকল্প প্রার্থী এদমুন্দো গনজালেস উরুতিয়ার পক্ষে দাঁড়ান।

সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, আলজাজিরা

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়