ট্রাম্পের ক্ষমার পর হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির প্রধান প্রসিকিউটর। কয়েক দিন আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমা পাওয়ার পর তিনি মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্ত আইনি চাপ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়িয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে হন্ডুরাসের অ্যাটর্নি জেনারেল জোহেল আন্তোনিও জেলায়া জানান, তিনি প্রসিকিউটর অফিসের প্রধান তদন্তকারী সংস্থার পাশাপাশি ইন্টারপোলকে ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমা করায় হার্নান্দেজ ৪৫ বছরের কারাদণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জেলায়ার এই ঘোষণা দিলেন।
হার্নান্দেজকে ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হয়েছিল, যেখানে নিউ ইয়র্কের প্রসিকিউটররা তাকে তিনটি মাদক ও অস্ত্র-সম্পর্কিত অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন। মার্কিন প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছিলেন, হার্নান্দেজ তার রাষ্ট্রপতিত্বকে ব্যবহার করে হন্ডুরাসকে ‘মাদক-রাষ্ট্র’তে রূপান্তরিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রসিকিউটররা আরো অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন পাচারেও হার্নান্দেজ মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রসিকিউটরদের মতে, ‘বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে সহিংস মাদক পাচারের ষড়যন্ত্রগুলোর মধ্যে একটি’ এর নেপথ্যে থাকায় তাকে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে হার্নান্দেজ তার নিজ দেশেও তদন্তের মুখে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক লাভের জন্য সরকারি তহবিল সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ট্রাম্পের হার্নান্দেজকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্তটি হন্ডুরাসবাসীকে ৩০ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হার্নান্দেজের ডানপন্থি ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী নাসরি টিটো আসফুরার সমর্থনে সমাবেশ করার আহ্বান জানানোর সময় এসেছিল।
ট্রাম্প গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেন, “আমি সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে সম্পূর্ণ ক্ষমা ঘোষণা করছি, তিনি আরো অনেকের মতো, যাদের আমি খুবই সম্মান করি। তার সঙ্গে খুব কঠোর ও অন্যায্য আচরণ করা হয়েছে।”
হার্নান্দেজের আইনজীবী রেনাটো স্টাবিলে বলেছেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঘোষণা স্পষ্টতই লিবার পার্টির রাজনৈতিক উদ্যোগ, যাদের প্রার্থী সাম্প্রতিক নির্বাচনের ভোট গণনার সময় পিছিয়ে রয়েছে। জেলায়া লিবার পার্টির মনোনীত, যারা দীর্ঘদিন ধরে হার্নান্দেজের বিরোধী।
এই ঘটনার ফলে হন্ডুরাসে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং আইনগত জটিলতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্টের মুক্তি এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা একসাথে দেশটির নির্বাচনী পরিস্থিতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ