আফগান সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের ৬ সেনা নিহত
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার কাছে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় ছয়জন সেনা নিহত হয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় পুলিশ ও নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উপজাতীয় জেলা কুররামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নিরাপত্তা চৌকিতে (চেকপয়েন্টে) হামলা চালায়, যার ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটলো। বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুসারে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানি তালেবান বা টিটিপি এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কুররামে নিযুক্ত এক সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, “হামলায় ছয়জন নিরাপত্তা কর্মী শহীদ এবং চারজন আহত হয়েছেন এবং লড়াইয়ে দুই জঙ্গিও নিহত হয়েছে।”
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত
প্রায় দুই দশক ধরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসা টিটিপি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ক্রমবর্ধমানভাবে হামলা চালাচ্ছে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণকারী তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে এই গোষ্ঠীটিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনেছে ইসলামাবাদ।
কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।
চলতি বছরের অক্টোবরে এক সপ্তাহ ধরে দুই দেশের সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি তীব্র যুদ্ধের দিকে যাওয়ায় কাতার, তুরস্ক এবং সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় আফগান ও পাকিস্তানি কর্মকর্তারা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
তবে, উত্তেজনা এখনও তীব্র। সীমান্তে হামলা অব্যাহত থাকায় সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোল্ডাক সীমান্ত ক্রসিংয়ে পাকিস্তান ও আফগান বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলিতে আফগানদের মতে, চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং একজন সেনা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ও পাকিস্তান একে অপরকে উসকানির জন্য দোষারোপ করেছে। তালেবান মুখপাত্রের মতে, পাকিস্তান হামলা শুরু করলে আফগান বাহিনী পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হয়, এবং পাকিস্তান দাবি করে যে আফগান বাহিনী বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরের বিষয়গুলোও এই উত্তেজনাকে উস্কে দিচ্ছে। পাকিস্তান তাদের আশ্রয় দেওয়া আফগান শরণার্থীদের মধ্যে অনেককে, বিশেষ করে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে, তাদের গণ বহিষ্কারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে।
তবে, ইসলামাবাদ গত সপ্তাহে বলেছে যে, তারা শিগগির জাতিসংঘের সাহায্য আফগানিস্তানে পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া শুরু করবে।
ঢাকা/ফিরোজ