ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ইরানে আরো হামলার হুমকি ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১২:২৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ইরানে আরো হামলার হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা যদি অস্ত্র না ছাড়ে তাহলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। একই সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনর্গঠনের যেকোনো প্রচেষ্টাকে ‘দ্রুত নির্মূল’ এবং ‘গুড়িয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বৈঠকে গাজায় ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি এগিয়ে নেওয়া এবং ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের উদ্বেগ দূর করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। 

ট্রাম্প দাবি করেন, গাজা যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল তার ভূমিকা পালন করছে (যদিও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে যাতে অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছে)। তিনি হামাসকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার জন্য সতর্ক করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা হামাসের নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছি। অস্ত্র ত্যাগ করার জন্য তাদেরকে খুব অল্প সময় দেওয়া হবে, দেখা যাক কী হয়।”

তিনি আরো বলেন, “যদি তারা অস্ত্র না ছাড়ে, যা করতে তারা সম্মত হয়েছিল, তাহলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।”

এ বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি বন্দীদের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি, ত্রাণ সহায়তা বৃদ্ধি এবং গাজা থেকে আংশিক ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে।

হামাস এখনও একজন ইসরায়েলি বন্দীর মরদেহ ফেরত দেয়নি। অন্যদিকে ইসরায়েল ক্রমাগত গাজায় প্রাণঘাতী হামলা চালানোর পাশাপাশি ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

তবে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে যাওয়ার দেরীর জন্য এককভাবে হামাসকেই দায়ী করেন। হামাস এর আগে বলেছিল যে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব অব্যাহত থাকা পর্যন্ত তারা অস্ত্র ত্যাগ করবে না। তবে তারা অস্ত্র একপাশে সরিয়ে রাখতে এবং ৭ থেকে ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল।

এদিকে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে, গত জুন মাসে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তেহরান আবারও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালুর চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি শুনতে পাচ্ছি ইরান আবার সবকিছু গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। যদি তারা তা করে, তবে আমাদের তাদের গুঁড়িয়ে দিতে হবে। আমরা তাদের চরমভাবে আঘাত করব। তবে আশা করবো, এমনটা ঘটবে না।” 

ইরান যদি সত্যিই পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করে, তাহলে ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘খুব দ্রুত সেই প্রচেষ্টা নির্মূল করা’ ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। তিনি সতর্ক করেন, এবারের হামলার ভয়াবহতা আগের বারের চেয়েও বেশি হতে পারে।

আগের হামলায় ব্যবহৃত বোমারু বিমানের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ঠিক জানি তারা কোথায় যাচ্ছে এবং কী করছে। আমি আশা করি তারা এটা করছে না, কারণ আমি একটি বি-২ বোমারু বিমানের জ্বালানি অপচয় করতে চাই না। এটি আসা-যাওয়ায় ৩৭ ঘণ্টার পথ। আমি অনেক জ্বালানি অপচয় করতে চাই না।”

ইরানের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে রাজি হননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘ভালোভাবে বিজয়ী’ হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে পরাজিত না করলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসত না।

ইসরায়েল যদি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে হামলা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “যদি তারা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি অব্যাহত রাখে, তবে হ্যাঁ। আর পারমাণবিক? দ্রুত। একটির ক্ষেত্রে উত্তর হলো: হ্যাঁ, অবশ্যই। অন্যটির (পারমাণবিক) ক্ষেত্রে: আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। তেহরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে আসছে এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।

সোমবার ট্রাম্প বলেন, ইরানের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘একটি চুক্তিতে আসা’। তিনি বলেন, “যদি তারা চুক্তি করতে চায় তবে সেটিই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।”

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়