ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিশ্ববিদ‌্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ-হত্যা: নেহা ৫ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০৭:৩৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বিশ্ববিদ‌্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ-হত্যা: নেহা ৫ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ‌্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় ফারজানা জামান নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. সাজেদুল হক আসামি নেহাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন, ঘটনার বিষয়ে চাহিদা মোতাবেক তথ্য সংগ্রহ এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা।

রাষ্ট্রপক্ষে হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি ভিকটিমকে দাওয়াত করে নিয়ে মদ পান করিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতা করে। নেহা ঘটনার মূল হোতা। মামলা এখনও রহস্যে ঘেরা। মদ থেকে সবকিছু শুরু। নেহা কোনোভাবে ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। সে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত। তার রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’

আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (লিটন) রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘নেহা তো আর ধর্ষণ করতে পারে না। ধরে নিলাম, সে নাচ-গান করে। মদ সরবরাহ করেছে তো রেস্টুরেন্টের লোকজন। মদ খাওয়ানো তো ধর্ষণের মধ্যে পড়বে না। রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই। কেন রিমান্ড চাইলো, তা বোধগম্য নয়। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। রেস্টুরেন্টের মালিক ভালো করে জানতে পারেন, তারা কী মদ তাদের দিয়েছেন। আসামির রিমান্ড বাতিলের আবেদন করছি। একান্ত প্রয়োজন হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।’

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নেহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলাটিতে বৃহস্পতিবার সাফায়েত জামিল নামে এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৩১ জানুয়ারি ওই শিক্ষার্থীর দুই বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী (২১) ও নুহাত আলম তাফসীরের (২১) পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

৩১ জানুয়ারি চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বাবা। মামলায় অজ্ঞাত আরও একজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আরাফাতের বাসায় যায়। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিল। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদ পান করায়।

মামলার এজহারে আরও বলা হয়, মদপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও সেখানে ছিল।

ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেয়। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক‌্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করে। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ওই তরুণী মারা যান।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়