ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কার্জন হলের আড্ডায় হাফিজুরের সঙ্গীদের খুঁজছে পুলিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৪ মে ২০২১   আপডেট: ২১:৪৪, ২৪ মে ২০২১
কার্জন হলের আড্ডায় হাফিজুরের সঙ্গীদের খুঁজছে পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার দিন কার্জন হলের সামনে হাফিজুরসহ অন্য আর কারা তার সঙ্গে  আড্ডায় ছিল তা নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৪ মে) এ বিষয়ে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন অর রশিদ রাইজিংবিডিকে বলেন, হাফিজুরের হত্যা বা আত্মহত্যার বিষয়ে এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে হাফিজুরের সঙ্গে কার্জন হলের সামনে সেদিন কারা আড্ডা দিয়েছিল, পরে তাকে কারা অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়েছিল এসব বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি।

১৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন হাফিজুর। ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যার পরে তিনি কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কার্জন হলের খোলা জায়গায় আড্ডা দেন। এরপরই গলায় জখম অবস্থায় হাফিজুরকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের সন্দেহ, যারা হাফিজুরের সঙ্গে আড্ডায় ছিলেন তারা তার সহপাঠী কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব হতে পারে। হাফিজুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের খোঁজ করছে পুলিশ। সর্বশেষ হাফিজুরের সঙ্গে কার কার কথা হয়েছে পুলিশ তা জানতে চায়। তবে ঘটনার পর থেকেই হাফিজুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে না। কার্জন হল এলাকা ও ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যেগুলো নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে গোয়েন্দারা।

সেদিনের আড্ডার বন্ধুদের শনাক্ত করতে পারলেই  হাফিজুর কিভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন বা সেইখানে কী ঘটেছিল সে বিষয়ের একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। যদিও প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাফিজুর আত্মহত্যা করেছেন।

তবে সহপাঠীরা অবশ্য অভিযোগ করছেন, হাফিজুর ৯ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তার নিখোঁজের ব্যাপারে ওইদিনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানায় জিডি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমনকি শাহবাগ থানাকেও অবহিত করা হয়। কিন্তু তারপরও পুলিশ বা সংশ্লিষ্টরা তার বিষয়ে খোঁজখবর নেয়নি। এ কারণেই হাফিজুরকে অজ্ঞাত হিসেবে ৯ দিন লাশ হয়ে হাসপাতাল মর্গে পড়ে থাকতে হয়েছিল।

পুলিশ আরো আন্তরিক হলে  হাফিজুরকে আরো আগেই শনাক্ত করা যেত বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করেছেন।

সোমবার দুপুরে টিএসসি চত্বরের মানববন্ধন সাদ্দাম বলেন, হাসপাতাল  মর্গে হাফিজুরের লাশ যখন রাখা হয় তখন সে যে গেঞ্জি পড়া ছিল সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের( ডাকসু) লোগো লাগানো ছিল। এরপরও কেন তাকে শনাক্ত করতে দেরি হলো? এটি কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। প্রশাসনকে জোর তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ দ্রুত বের করতে হবে।

গত রোববার (২৩মে) হাফিজুরের স্বজনেরা মর্গে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। হাফিজুর ঢাবি তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া তিনি মূকাভিনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ঢাকা/মাকসুদ/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়