ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৬ বছরেও শেষ হয়নি তাবেলা সিজার হত্যা মামলার বিচার

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০৮:৫৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
৬ বছরেও শেষ হয়নি তাবেলা সিজার হত্যা মামলার বিচার

তাবেলা সিজার (ফাইল ফটো)

৬ বছরেও শেষ হয়নি রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার। সাক্ষী না আসায় এতোদিনেও মামলাটির বিচার শেষ হয়নি। এর মধ‌্যে করোনার কারণে আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে এ বছরে মামলাটির বিচার শেষ হবে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১৫ সালের এই দিনে (২৮ সেপ্টেম্বর) গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে দুবৃর্ত্তদের গুলিতে নিহত হন নেদারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিওবিডির কর্মকর্তা তাবেলা সিজার। ওই দিনই তার সহযোগী আইসিসিও এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ হেলেন ভেন ডার বিক বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে বিচারাধীন। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ১৪ অক্টোবর দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জেহাদ হোসেনের জেরার জন্য তারিখ ধার্য রয়েছে।

মামলা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, ‘তাবেলা সিজার হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষের দিকে। মামলাটিতে এখন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক জেহাদ হোসেনের জেরা চলছে। গত দেড় বছর ধরে করোনার কারণে আমরা কোনো কাজ করতে পারেনি। দেড় বছর পর আবার মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আর কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়ে মামলাটি যুক্তিতর্ক পর্যায়ে চলে যাবে। আশা করি, আদালত এই বছরের মধ্যে রায় ঘোষণা করতে পারবেন। দোষীদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয় আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আসামি আবদুল মতিনের আইনজীবী বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আবদুল মতিনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ঘটনার পর দীর্ঘদিন তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে থানায় একটি জিডিও করা হয়। অনেক দিন পর তাকে মামলাটিতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। কোনো সাক্ষী সেভাবে মতিনের নাম বলেননি। আমরা তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আইনিভাবে লড়ে যাচ্ছে। আশা করছি, তিনি মামলায় খালাস পাবেন।’

এ হত‌্যা মামলার তদন্ত করে ২০১৬ সালের ২২ জুন ডিবি পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এতে বিএনপি নেতা এমএ কাইয়ুমসহ (কাইয়ুম কমিশনার) সাত জনকে অভিযুক্ত করা হয়। চার্জশিটে বলা হয়, হামলাকারীদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এই পরিকল্পনা করা হয়।

চার্জশিটে আরও বলা হয়, আসামি সোহেলের কাছ থেকে পিস্তল ভাড়া নিয়ে খুনিরা তাবেলা সিজারকে হত্যা করে। মতিনের নির্দেশে ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শাখাওয়াতের মোটরসাইকেল নিয়ে মিনহাজুল, তামজিদ ও রাসেল চৌধুরী গুলশান ২-এর ৯০ নম্বর সড়কে যান। ওই সড়কের গবর্নর হাউসের সীমানা প্রাচীরের বাইরে ফুটপাতে নিরিবিলি ও অন্ধকার স্থানে তামজিদ গুলী করে তাবেলা সিজারকে (৫১) হত্যা করেন। তাকে সহায়তা করেন রাসেল চৌধুরী ও মিনহাজুল।

২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। আর ১১ নভেম্বর মামলায় প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। মামলাটিতে এখন পর্যন্ত চার্জশিটভূক্ত ৭০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন-কাইয়ুম কমিশনা, তার ভাই আবদুল মতিন, তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল ওরফে শুটার রুবেল, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল, মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগনে রাসেল, শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরিফ ও মো. সোহেল ওরফে ভাঙারী সোহেল। আসামিদের মধ্যে কাইয়ুম কমিশনার ও ভাঙারী সোহেল এখনও পলাতক রয়েছেন। এছাড়া, গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ জনের মধ্যে আবদুল মতিন ছাড়া বাকি চার আসামিই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়