ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা: বায়ুদূষণ রোধে ৩ মেয়াদে উদ্যোগ নে‌বে সরকার

বি‌শেষ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৩০ জুন ২০২৫   আপডেট: ২১:১৬, ৩০ জুন ২০২৫
চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা: বায়ুদূষণ রোধে ৩ মেয়াদে উদ্যোগ নে‌বে সরকার

চীনের একদল বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়ার কথা জা‌নি‌য়ে‌ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণাল‌য়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তি‌নি ব‌লে‌ছেন, “বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া হ‌চ্ছে। আপাতত ধুলা কমা‌তে শীত আসার আগেই রাজধানীর সব কাঁচা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রাস্তায় মাটি ঢেকে দেওয়া ও পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ‘জিরো সয়েল’ নীতি কার্যকর, মাটি শক্তকরণ এবং পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে চীনের একদল বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “শহুরে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ পুরনো ও উচ্চমাত্রার ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরনো যানবাহন অপসারণ ও নতুন ২৫০টি পরিবেশবান্ধব যানবাহন যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া, নির্গমন মান বজায় রাখতে বিআরটিএ ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করবে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে চীনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”

পরিবেশ উপদেষ্টা আরো বলেন, “সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ ছাড়া কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য একটি উন্নত বায়ু নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন, বৈশ্বিক মান অনুসারে নির্গমন মান উন্নয়ন, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট চালু এবং রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণে কর প্রণোদনাও বিবেচনায় রয়েছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর উচ্চ দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে অব্যাহত নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবে এবং দেশজুড়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এদিকে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শহরে সড়কে বেড়া বসানো এবং ৫০টি বৈদ্যুতিক যানবাহন চালুর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জাইকা সহায়তাপ্রাপ্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটটি বাস্তবভিত্তিক বায়ু গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যা প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি বিইএসটি প্রকল্পও বাস্তবায়িত হবে।”

চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথ কাজের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এই সহযোগিতা বাংলাদেশের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করবে। সরকারের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট—পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল ইসলাম, নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউটের উপ-ডিন অধ্যাপক হাইকুন ওয়াং, বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক টেংইউ লিউ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বায়ুদূষণ মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।

বৈঠকে জাতীয় নির্গমন ইনভেন্টরি ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়, যা দেশের বায়ু দূষণের উৎস চিহ্নিত করে বিজ্ঞানভিত্তিক টার্গেটেড হস্তক্ষেপের ভিত্তি তৈরি করবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়