ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মামলা কর‌বে দুদক

মানবপাচারসহ ১ হাজার ১৫৯ কোটি আত্মসাৎ ক‌রে‌ ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সি

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
মানবপাচারসহ ১ হাজার ১৫৯ কোটি আত্মসাৎ ক‌রে‌ ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সি

সি‌ন্ডি‌কেট ক‌রে ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সি মানবপাচারসহ ১ হাজার ১৫৯ কোটি ৮২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ক‌রে‌ছে ব‌লে প্রমাণ পেয়ে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন। দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এসব প্রতিষ্ঠা‌নের বিরু‌দ্ধে মামলার সুপা‌রিশ ক‌রলে ক‌মিশন তা মঞ্জুর ক‌রে‌ছে। ফ‌লে, তের‌টি ওভারসিজ কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকসহ অন‌্যান‌্যদের বিরু‌দ্ধে যেকো‌নো সময় পৃথক তের‌টি মামলা  কর‌বে দুদক।

রবিাবর (১৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

তি‌নি ব‌লেন, “আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০ (বি)/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/৪২০/৪০৯ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।”

দুদক জানায়, আকাশ ভ্রমণ ওভারসিজের মালিক মনসুর আহমেদ কালামের বিরুদ্ধে ১৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তাছাড়া উইনার ওভারসিজের মালিক মাহফুজুল হক ও রহিমা হক ৫৯ কোটি ৮৩ লাখ ১০ হাজার টাকা, শাহীন ট্রাভেলসের মালিক এম শাহাদাত হোসাইন (তসলিম) এর বিরুদ্ধে ১২৩ কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, নাভিরা লিমিটেডের এমডি শেখ মোহাম্মদ শাহিদুর রহমান, মাহবুবুর রহমান ও মো. শামীম হাসানের বিরু‌দ্ধে ৮১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগে বলা হ‌য়ে‌ছে।

আদীব এয়ার ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস মালিক মো. কে এম মোবারক উল্লাহ, মো. আবুল কালাম আজাদ, নওশাদ আরা আক্তার, হাছনা আক্তার আজাদ ১৩২ কোটি ২৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা, ইউনাইটেড ম্যানপাওয়ার কনসালটেন্স লিমিটেড এর মালিক জেড ইউ সায়েদ, নাজমা আক্তার, জুহানা সুবাইতা ও জিসান সায়েদ এর বিরুদ্ধে ৫৯ কোটি ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রীনল্যান্ড ওভারসীজের মা‌লিক রেহানা আরজুমানের বিরু‌দ্ধে ৭৯ কোটি ৬১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা, পি. আর. ওভারসিস লিমিটেডের এমডি গোলাম রাকিব ও ইমান আকতার পুনম এর বিরুদ্ধে ৭৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা, জাহারাত এসোসিয়েট লি. এর মালিক মুহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), নাহিদা আক্তার, রওশন আরা পারভিন ও একেএম মোশারফ হোসেন এর বিরুদ্ধে ১১৬ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, অপূর্ব রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মহিউদ্দিন আমে‌দের বিরুদ্ধে ৫৩ কোটি ২৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মের্সাস জান্নাত ওভারসীজের মালিক লিমা বেগমের বিরুদ্ধে ৬৩ কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, মিডওয়ে ওভারসিস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ রফিকুল হালদার ভূঁইয়া ও কাজী অদিতি রুবাইয়াত এর বিরুদ্ধে ৬২ কোটি২৯ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা ও সাউথ পয়েন্ট ওভারসিস লিমিটেডের এমডি মঞ্জুর কাদের, সাদিয়া মঞ্জুর, আহমেদ আতাউর রহমান, আহমেদ খালেদ লুবনানী ও আহমেদ ফয়সাল রমাদানীর বিরুদ্ধে ১১২ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক জানায়, ১৩টি ওভারসিজ কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকসহ অন্য আসামিরা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেট করে বায়রার রেজিস্ট্রেশনের শর্ত ভঙ্গ করেছেন।

আসামিরা বিভিন্নভাবে সরকারি দলের বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার ৫ গুণ টাকা বেশি নিয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত চুক্তির আওতায় শ্রমিক রিক্রুটের জন্য এজেন্ট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে মালয়েশিয়ায় চাকরি নির্দিষ্ট প্রস্তাবে বিপরীত শ্রমিক প্রেরণের জন্য নির্ধারিত বাছাই ও অর্থসংশ্লিষ্ট শর্ত এড়িয়ে জনশক্তি/শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ভিত্তিতে পরস্পর যোজসাজশে লাভবান হওয়ার হীন উদ্দেশ্যে রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতি অনুগ্রহ দেখিয়ে ও রিক্রুটেড শ্রমিকদের অবৈধভাবে ক্ষতিসাধন করে চুক্তির বাইরে বিভিন্ন ধাপে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে অস্থায়ী দায়িত্ব সম্পাদনকালে সরকারদলীয় প্রভাব খাটিয়ে আসামিরা যোগসাজশ ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেন।  ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিম্নরূপে চুক্তিবদ্ধ আইনসঙ্গত পারিশ্রমিক ছাড়া অবৈধ পারিতোষিক সুবিধা ও অবৈধ অর্থ গ্রহণ এবং চুক্তিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড করা ও চুক্তি অনুযায়ী করণীয় কাজ থেকে বিরত থাকার পুরস্কার হিসেবে বায়রার প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে সরকার দলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার সুবিধা ব্যবহার করে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করেন।

তারা অবৈধভাবে গৃহিত অর্থ অবৈধভাবে হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর করে পাচার করেন; যা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে ৫ গুণ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণপূর্বক মালয়েশিয়ায় পাঠানো কর্মীর কাছ থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রতি কর্মীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা গ্রহণপূর্বক ১ হাজার ১৫৯ কোটি ৮২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়