ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লকডাউনে রিকশাচালকের  দুঃখ...

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ১৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৮:০৮, ১৫ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনে রিকশাচালকের  দুঃখ...

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে দেশব‌্যাপী চলছে ৮ দিনের ‘কঠোর লকডাউন’।  এই কারণে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যানবাহন। তবে, বিশেষ প্রয়োজনে   সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচলের অনুমতি রয়েছে। রিকশা চালকরা বলছেন, নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা তাদের বাহনে চড়েন না খরচ বাঁচাতে। তারা হেঁটে হেঁটে কর্মস্থলে যান, বাসায়ও ফেরেন হেঁটে। আর মধ‌্যম ও উচ্চ আয়ের পেশাজীবীরা নিজস্ব পরিবহনে চলাচল করেন। তাই লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালকরা। 

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর, মহাখালী, ফার্মগেট এলাকা ঘুরে রাস্তার পাশে অপেক্ষমাণ রিকশাচালক ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গণপরিবহনের ভাড়া অনেক কম। এখন গণপরিবহন নেই। রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাই শেষ ভরসা। কিন্তু এত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাওয়া আসা পোষায় না নিম্ন আয়ের পেশাজীবীদের।

রিকশাচালক আব্দুল খালেক। বয়স প্রায় ৫০ বছর। বাসায় মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মা ও এক মেয়ে অসুস্থ। নিয়মিত ওষুধ কিনতে হয়। তাদের ওষুধ কেনা ও খাবার খরচ চালাতে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। একদিন কাজ না করলে সংসার চলে না। 

আব্দুল খালেক বলেন, ‘পরিবারের প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে হয়েছে। যেসব নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত কম খরছে গণপরিবহনে চলতেন, এখন তারা বেশি ভাড়ায় রিকশায় উঠতে চান না। আর উচ্চবিত্ত তো নিজেদের গাড়ি নিয়েই চলেন। লকডাউনে গাড়ি না চললেও আমাদের রিকশাচালকদের দৈনিক আয় কমে গেছে। আগে যেখানে ৮০০-১০০০ হাজার টাকার ওপরে আয় করতাম, এখন ৫০০ টাকা আয় করাও কঠিন।’

আরেক রিকশাচালক মো. হোসেন। দুই সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে সংসার। দৈনিক ৫০০ টাকার ওপর খরচ থাকলেও আয় সেভাবে নেই। হোসেন বলেন, ‘লকডাউনে আপনারা ভাবেন, আমাদের অনেক ইনকাম। আসলে হিসাব তার উলটো। মানুষ খুব বেশি বের হয় না। যারা বের হয় রিকশায় ওঠে না। কার‍ণ তাদেরও আয় কমে গেছে। আগে গাড়িতে চলতো। এখন হেঁটে যায়। কেউ কেউ ওঠে। কিন্তু ভাড়া আহামরি বেশি নিতে পারি না।’

একটি গার্মেন্টসে মাল ওঠা-নামার দায়িত্বে আছেন আবু তালহা। অফিস বাসা থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তিনি বলেন, ‘ভাই আমাদের সীমিত আয়। লোকাল বাসে চলাচল করলে তেমন খরচ হয় না। কিন্তু এখন তো বাস বন্ধ। রিকশা দিয়ে যাতায়াতের মতো বিলাসিতার সুযোগ আমাদের নেই। তাই হেঁটে গন্তব্যে চলে যাচ্ছি।’

শফিক উদ্দিন রিকশাচালকের সঙ্গে ভাড়া দরদাম করছিলেন। তিনি বলেন, ‘সীমিত আয়ের মানুষ আমরা। এত ভাড়া দিতে রাজকীয় চলাচল আমাদের পক্ষে তো সম্ভব না। তবু উপায় কী? অফিসে যেতে তো হবেই।’

ইয়ামিন/এনই/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়