ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫০, ২১ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ২০:৫৩, ২১ নভেম্বর ২০২৫
নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : পিআইডি

নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। একটি নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ, যুদ্ধাহত এবং অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন এবং ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সব শহীদ, আহত এবং অংশগ্রহণকারী সর্বস্তরের জনগণের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালে রণক্ষেত্রে। সে সময় ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সঙ্গে নৌ ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছিল বলে ২১ নভেম্বরকে মুক্তিযুদ্ধের একটি মাইলফলক হিসেবে গৌরবের সঙ্গে পালন করা হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সংগ্রামের সূচনা ঘটে ২৫ মার্চের রাত থেকেই। আমরা যদি বিজয় অর্জন না করতাম তাহলে এই বীর সেনাদের মৃত্যুদণ্ড ছিল অনিবার্য, অসহনীয় হয়ে যেত তাদের পরিবারের সব সদস্যের জীবন।”

অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, “মুক্তিকামী সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অকুতোভয় বীর সেনানীরা জীবনের পরোয়া না করে, পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারাই দেশের আপামর জনসাধারণকে সাহস জুগিয়েছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জল-স্থল ও আকাশপথে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশমাতৃকাকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে এনেছেন। যুদ্ধ বেগবান ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে তখন বাংলাদেশ ফোর্সেস গঠন করা হয়েছিল। যার অধীনে ১১টি সেক্টরে দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।”

“এরই চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখি ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সম্মিলিত অভিযানে। পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে এই যৌথ অভিযানই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় এনে দিয়েছিল।”

তিনি উল্লেখ করেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে এবং ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও চলমান দেশ পুনর্গঠনের কাজে সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আস্থার প্রতিদান দিয়েছে।”

তিনি গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত থেকে বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে এই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, “একটি শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমরা সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তথাপি, যেকোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সদা প্রস্তুত এবং সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাহিনীগুলোতে যুগোপযোগী প্রযুক্তি সংযোজনের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।”

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, “বিগত ৩৭ বছরে জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সম্পন্ন করেছে এবং বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ১০টি মিশনে অংশগ্রহণকারী রয়েছে।”

তিনি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সাফল্যের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যাতে বিশ্বের চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলসমূহে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে সেজন্য তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রাপ্তির চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।” খবর বাসসের।

ঢাকা/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়