ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নতুন বিধানসহ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২৫ জারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৭, ২৫ নভেম্বর ২০২৫  
নতুন বিধানসহ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২৫ জারি

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদ করে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে জানিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আগের বিধিমালায় একাধিক সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল। সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে নতুন চাহিদা, বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা যুক্ত করে হালনাগাদ শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগের বিধিমালায় কেবল ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা প্রদান করার বিষয়টি উল্লেখ থাকায় সীমিত জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়নি। এজন্য নতুন বিধিমালায় ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে (ট্রাফিক সার্জেন্টের নিচের পদ নয়)। ফলে, এখন যদি কোনো ব্যক্তি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিচে নন-এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সামনে বিধি ৬-এর উপ-বিধি (২), (৩) বা (৪)-এর অধীন কোনো অপরাধ করেন, তাহলে ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলেই তাকে জরিমানা করতে পারবেন।

এ উদ্যোগ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে বলে আশা করছে মন্ত্রণালয়।

এছাড়া শব্দদূষণের অন্যতম বড় উৎস হর্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগের বিধিতে আমদানি, উৎপাদন, মজুত ও বিক্রি-সংক্রান্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় তদারকিতে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল। নতুন বিধিমালায় এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত হর্ন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সুরযন্ত্র বাজানো নিষিদ্ধ; প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ; যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা; নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্ন বা অনুরূপ শব্দসৃষ্টিকারী যেকোনো পণ্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; রাতে নির্মাণকাজ বন্ধ; শিল্পকারখানা ও জেনারেটরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন এবং সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।

শব্দদূষণ বিধিমালা সংশোধনের জন্য বিভিন্ন সময়ে অংশীজনদের নিয়ে সভা ও কর্মশালা শেষে খসড়া প্রস্তুত করে সরকার। পরবর্তীতে সব মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ এবং জনগণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন দেশের সর্বোত্তম ব্যবহার পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালায় থাকা দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয় এবং বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়