ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য বহুমাত্রিক

ডাঃ রুবাইয়াৎ ফেরদৌস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৯ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১০:৫৩, ৯ মার্চ ২০২৫
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য বহুমাত্রিক

নারী দিবস এলে আমরা নারীদের অধিকার আদায়ের কথা বলি, নারীদের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করি। কিন্তু শুধু নারীদের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলেই হবে না, এই দিনটি মনে করিয়ে দেয় নারীদের অধিকার রক্ষা, সমান সুযোগ তৈরি, লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নারীদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনের কথা। এবারের প্রতিপাদ্য হলো-‘অধিকার, সমতা ,ক্ষমতায়ন- সকল নারী ও কন্যার উন্নয়ন।’ এ নিয়ে যদি বলতে হয় তাহলে পুরো সমাজের কাছে ছোট ছোট কয়েকটা প্রশ্ন, কিন্তু অর্থপূর্ণ প্রশ্ন আমি ছুঁড়ে দিতে চাই। আমরা এখনো কেন লড়াই করেই যাচ্ছি? এখনো শত শত মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে যৌতুকের জন্য নির্যাতিত। কেন? এখনো কেন পাবলিক প্লেসে নারীর হেনস্থার শিকার হতে হয়? এখনো নারী কেন আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে? 

আমার এ প্রশ্নগুলোর বাইরেও হাজার হাজার প্রশ্ন নিয়ে আজও আমাদের নারীসমাজ যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধের অবসান এখন সময়ের দাবি। অথচ নারী কোন একক পরিচয়ে সীমাবদ্ধ নন-তিনি একাধারে মা, মেয়ে, স্ত্রী, বোন, কর্মী, নেতা, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার, খেলোয়াড়, স্বপ্নদ্রষ্টা ও সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত। শিক্ষা, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, রাজনীতি, ব্যবসা, ক্রীড়া সবক্ষেত্রে নারীরা সফলতার গল্প লিখেছেন। বেগম রোকেয়া থেকে মালালা ইউসুফজাই, মেরি কুরি থেকে কাল্পনা চাওলা। তারা প্রমাণ করেছেন যে, নারী এগিয়ে গেলে সমাজও এগিয়ে যায়।

বিশ্বখ্যাত লেখিকা মায়া এঞ্জেলু বলেছেন-“প্রতিবার একজন নারী যখন নিজের জন্য দাঁড়ায়, তখন তিনি সকল নারীর জন্যেও দাঁড়ায়।’’

জানা যায়, ১৯০৮ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন প্রায় ১৫ হাজার নারী শ্রমিক। তারা কর্মঘণ্টা কমানো, বেতন বাড়ানো ও ভোটাধিকার দাবি করেন। ওই আন্দোলন নারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি বড় নজির তৈরি করে। এই শ্রম আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ পথপরিক্রমায় চালু হয় ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’।কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এখনো অনেক নারী বৈষম্যের, নির্যাতনের, বেতন বৈষম্য, সুযোগ ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার। 

তারপরেও এই অধিকার আদায়ের লড়াই থামানো যাবে না। আমরা নারীরা শত বাধার দেয়াল ভাঙবো। কারণ নারী হলো শক্তি, নারী হলো আগামী দিনের স্বপ্নদ্রষ্টা। নারী যখন নিজের শক্তি বুঝতে পারে, তখন সে পুরো বিশ্ব বদলে দিতে পারে। আমরা আগামীর পথ আলোকিত করে নারী-পুরুষ সকলেই হাঁটবো। দেশ ও জাতিকে উন্নত করব।

কবি জীবনানন্দ দাসের সাথে কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই- ‘‘আমার ভিতরে রক্তের স্রোত আছে/আমার চোখে অগ্নিশিখা/আমি থামবো না/ আমি হারবো না।’’

লেখক: মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ‍ও সহকারি অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি বিভাগ

ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল।

ঢাকা/লিপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়