ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডিজিটাল আইন বাতিল দাবি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ৩০ মার্চ ২০২৩  
ডিজিটাল আইন বাতিল দাবি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, ওই পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামানকে রাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

বৃহষ্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানান।

তারা অবিলম্বে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, আজ জাতির বিবেক সাংবাদিকদেরই যেখানে স্বাধীনতা নেই, সেখানে সাধারণ নাগরিকের অবস্থা যে কতটা ভয়াবহ তা সহজে অনুমেয়।

পেশাজীবী নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম চরম দুর্দিন চলছে। সরকার, সরকারি দল, আমলাতন্ত্র এবং প্রভাবশালী মহল গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। সাংবাদিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার, সাংবাদিক হত্যা, বিভিন্ন অজুহাতে গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া-এসব এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় ৫৪ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। এক দশক পেরিয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের বিচারতো দূরে থাক, তদন্তেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে। ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ চলছে। এই আইনে অভিযুক্তরা আদালতে যাচ্ছেন কিন্তু তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। নিপীড়নমূলক এই আইনের ১৪টি ধারাই যেহেতু জামিন অযোগ্য, তাই এই আইন একটা সাংঘাতিক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিবৃতিতে পেশাজীবীদের এই দুই নেতা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কবলে পড়ে বাংলাদেশের মিডিয়ার যখন প্রাণ যায় যায় অবস্থা, সে পরিস্থিতিতে একের পর এক কালা কানুনের খড়গ ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এমন কোনো পন্থা নেই যা অবলম্বন করা হচ্ছে না।

মিডিয়ার কণ্ঠরোধের সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার পাশাপাশি  বাক ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন নানামুখী চাপ এবং বিধিনিষেধর বেড়াজালে সাংবিধানিক এ অধিকার মলাটবদ্ধ নথিতে রুপান্তরিত হয়েছে। অতীতে যখনই গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আঘাত এসেছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। এবার গণমাধ্যম ‘অসহায় আত্মসমর্পণ’ করে বসে আছে! যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল এবং সরকারকে নিপীড়নের পথ পরিত্যাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

/মেয়া/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়