ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঘাস চাষ: অল্প পুঁজিতে বেশি আয় আশাদুলের 

মোসলেম উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ৬ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:০০, ৬ এপ্রিল ২০২১
ঘাস চাষ: অল্প পুঁজিতে বেশি আয় আশাদুলের 

করোনায় অনেক তরুণ যখন চাকরির জন্য হন্য হয়ে ছুটছেন, সেসময়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের আশাদুল ইসলাম নামে এক যুবক শুরু করেছেন অল্প পুঁজিতে বেশি রুজির আয়ের পথ। তিনি গত বছর এই সময়েই তার ৭ বিঘা অনাবাদি জমিতে দেশি ঘাস চাষ শুরু করেছেন। প্রতি দেড় মাস অন্তর ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকার ঘাস বিক্রি করেন তিনি।

ঘোড়াঘাট উসমানপুর কলোনির রাস্তার পাশে তার এই ঘাস চাষের জমি। প্রথমে বিঘাপ্রতি ৩ টলি গোবর সার, ১ বস্তা ডেপ, ইউরিয়া ১ বস্তা ও ২ কেজি ম্যাগনেসিয়াম দিয়ে জমি তৈরি করেছেন। 

গরম মৌসুমে দেড় মাসের মধ্যে ঘাস কেটে বাজারজাত করার উপযুক্ত হয়। আবার শীতের মৌসুমে তা বৃদ্ধি হতে সময় লাগে দুই মাস। ঘাস কাটা অব্দি দুইবার পানির সেচ দিতে হয়। ঘাস কাটার পর আবারও অল্প করে ডেপ ও ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়। বাজারজাত করার মতো হলে ঘাস ব্যবসায়ীরা জমিতে এসে বিঘা হিসাব কিংবা আঁটি করে কিনে নেয়। প্রতি বিঘা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। 

একজন গরু খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে ১৫টি গরুর খামার আছে। প্রতিদিন অনেক টাকার ঘাস কিনে খাওয়াতে হতো। তাই আমি নিজেই ১ বিঘা জমিতে ঘাসের চাষ করেছি। এখন আর বাজার থেকে ঘাস কিনতে হয় না। নিজের আবাদের ঘাস খেয়েই গরু শেষ করতে পারে না।’

ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি বাজারের ঘাস ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, ‘ঘাস চাষিদের নিকট থেকে আমি আঁটি হিসাবে ঘাস কিনে আনি। প্রতি আঁটি ১৪ থেকে ১৫ টাকা দরে পাইকারি কিনে, তা ২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। প্রতিদিন প্রায় আমি ১০০ থেকে ১২০ আঁটি ঘাস বিক্রি করি। তাতে খরচ বাদ দিয়ে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ হয়।

ঘাস চাষি আশাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এই ঘাসের চাষ শুরু করেছি। এর পাশাপাশি আরও একটা ব্যবসা করি, তাতে আমার দিনকাল ভালোই কাটছে। প্রতি বিঘায় প্রথমে আমার ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৭ বিঘা জমিতে ঘাসের চাষ করছি। দেড় মাস পরপর ঘাস কাটি এবং ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারি দেই। এতে প্রতি দেড় মাসে প্রায় ৯০/৯৫ হাজার টাকার ঘাস বিক্রি করি। এক বছর হলো এই জমিতে ঘাস লাগিয়েছি, আশা করছি আরও এক বছর যাবৎ ঘাস বিক্রি করতে পারবো।’

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার এখলাছ সরকার বলেন, ‘এবছর উপজেলায় মোট ১০ হেক্টর জমিতে ঘাস চাষ হয়েছে। উসমানপুরের আশাদুল ইসলামের ৭ বিঘা জমিতে ঘাসের চাষ হয়েছে, চোখে ধরার মতো। আমরা প্রতিনিয়ত তার ঘাস ক্ষেত পরিদর্শন করে আসছি। ভালো ফলনের জন্য তাকে আমরা সবসময় পরামর্শ দিচ্ছি। ঘাস চাষ করে আশাদুলের মতো আরও অনেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।’

দিনাজপুর/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়