ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সড়কে দূরপাল্লার বাস পার্কিং, ঝুঁকি বাড়ছে রাতের ঢাকায়

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ২১:০০, ৩ ডিসেম্বর ২০২০
সড়কে দূরপাল্লার বাস পার্কিং, ঝুঁকি বাড়ছে রাতের ঢাকায়

রাজধানীর গাবতলী, শ‌্যামলী, কল‌্যাণপুর, কমলাপুর ও মহাখালীসহ একাধিক জায়াগায় প্রধান সড়কের ওপর প্রতিদিন পার্কিং করা হচ্ছে দূরপাল্লার বাস। টার্মিনাল বাদ দিয়ে প্রধান সড়কের অর্ধেকেরও বেশি পথ দূরপাল্লার বাসের দখলে চলে যায়।  এতে সড়ক ও বাস টার্মিনালের পার্থক‌্য বোঝা কঠিন হয়ে পড়ছে। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।  এছাড়া, এসব স্পটে চলছে উল্টোপথে গাড়ি।  ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।  আশঙ্কা বাড়ছে প্রাণহানিরও।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, কমলাপুর রেল-স্টেশনের সামনের সড়কে মিনিটের ব্যবধানে এক একটি করে বাস আসছে।  সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তা বন্ধ করে তুলছে যাত্রী।  এ কারণে স্টেশনে প্রবেশ মুখসহ আশেপাশের এলাকায় তীব্র  যানজটের  সৃষ্টি হয়েছে। 

‘রাস্তার ওপর গাড়ি কেন’—এমন প্রশ্নের জবাবে সোহাগ পরিবহনের হেলপার সুমন বলেন, ‘কাউন্টার আছে তো। তাই কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়ালাম। এখনই চলে যাবো।’

স্থানীয় পান দোকানি নিয়ামত আলী বলেন, ‘এই চিত্র প্রতিদিনের। কেউ কিছু বলার নেই। এসব গাড়ির কারণে সোজা পথে অনেক ছোট বাহন আসতে পারে না। তাই সুযোগ বুঝে উল্টোপথে আসে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও রিকশা। এর ফলে ছোট বাহনগুলোর মধ‌্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রায় আহত হচ্ছেন আরোহীরা।’

জানতে চাইলে কমলাপুর জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাসগুলো সরিয়ে দেই। আবার যাত্রীদের কথাও বিবেচনা করতে হয়।  এ জন্য ট্রাফিক পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে ফকিরাপুল-আরামবাগের প্রধান সড়কজুড়ে পার্কিং করা দূরপাল্লার বাস

একই দৃশ‌্য কল্যাণপুর, শ্যামলী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, পান্থপথ, আরামবাগ, ফকিরাপুল মালিবাগ, মহাখালী, গাবতলীতেও দেখা গেছে। এসব এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে দূরপাল্লার সব বাস সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। প্রধান সড়ক যেন ট্রার্মিনালে পরিণত হয়েছে। সোহাগ, শ্যামলী, হনিফ, এস আলম, ঈগল, রয়েল, দেশ ট্রাভেলস, সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস পুরো রাস্তা দখল করে রেখেছে। আর এতেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে ট্রাফিক পুলিশের ভয়ে দিনের বেলা বাসগুলো রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু সন্ধ্যার পর তারা চলে গেলে বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। যানজট লেগে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। তবে, এ সময় ছোট পরিবাহন নিয়ে অনেকেই তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উল্টোপথ দিয়ে যায়। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে।  বিশেষ করে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশা, সিএনজি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাস্তায় এই সংকট চলছে। তবে, পরিবহন মালিক বা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের আলাপও চলছে।  এই সমস্যা আর থাকবে না।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা এনায়েতউল্লাহ খান বলেন, ‘মূলত যাত্রী ওঠা-নামার জন্য রাস্তায় কিছুক্ষণ গাড়ি রাখতে হচ্ছে। যা যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই সড়কে পার্কিং করা হয়।’ এছাড়া, টার্মিনালে জায়গা স্বল্পতার কারণেও প্রধান সড়কে পার্কিং করতে হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

ঢাকা/মাকসুদ/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়