ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

টিকে থাকার লড়াই শেষ হয় না

রফিকুল ইসলাম মন্টু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২৩ মে ২০২১   আপডেট: ১০:২৮, ২৩ মে ২০২১
টিকে থাকার লড়াই শেষ হয় না

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে বিপন্ন গ্রাম। খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি গ্রামের ছবি

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ নিজেদের অভিযোজন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে সংকট মোকাবিলা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের একটি বড় অংশ নিজের সম্পদ বিক্রি করে টিকে আছেন। বাঁচার তাগিদে এক দল মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। অরেক দল মানুষ অস্থায়ীভাবে অন্য এলাকায় চলে গেছেন। অনেক পরিবারের সদস‌্যরা দৈনন্দিন খাবার কমিয়ে অথবা কম দামের খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করেছেন। একদল মানুষ কাজের সন্ধানে বাইরে চলে গেছেন। অনেক পরিবার মহাজন অথবা দোকান থেকে ধারদেনা করে টিকে আছেন। অনেকে নিজেদের সঞ্চয় করা অর্থ দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। সরকারি ও এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া সহায়তা কিছু মানুষকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছে।

২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শনাক্ত হয় কোভিড-১৯ মহামারি। এরফলে গোটা দেশের মানুষ লকডাউনসহ নতুন সংকটের মুখে পড়েন। শহর থেকে চাকরি হারিয়ে গ্রামে ফিরে আসার কথা কেউ কখনো ভাবেননি। কিন্তু সেটাই করতে হয়েছে তখন। এই সংকটের মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ২০ মে বাংলাদেশের পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এরফলে মানুষগুলো দ্বিমুখী সংকটের মুখোমুখি হয়। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওই এলাকাটি আগে থেকেই ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডর কিংবা ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেছেন ওই এলাকার মানুষ। কিন্তু তার চেয়েও বেশি সংকট মোকাবিলা করেছেন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতের সময়ে। কেননা, এই সময়ে করোনার কারণে লকডাউন ছিল।

ধ্বংসস্তুপের ভেতরে বেঁচে থাকার চেষ্টা। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা বন্যতলা গ্রামের ছবি

বাংলাদেশের পশ্চিম উপকূলের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা বাবর আলী। বয়স ৪৫। তিনি ২২ বছর ধরে চালের ব্যবসা করতেন প্রতাপনগর ইউনিয়নের তালতলা বাজারে। করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে তার এই ব্যবসার প্রচুর ক্ষতি হয়। দোকানের নিয়মিত ক্রেতাদের কাছে বকেয়া পড়ে প্রায় ৫ লাখ টাকা। বাবর আলী ব্যবসা গুটিয়ে নেন। এখন তিনি দূরের গ্রামে বিভিন্ন পণ্য ফেরি করে উপার্জনের চেষ্টা করছেন। 

বাবর আলী বলেন, ‘আমরা শুন‌্যে পৌঁছে গেছি। এখান থেকে আবার ওপরের দিকে ওঠার জন্য সিঁড়ি খুঁজছি। কম মূল্যের খাবার কিনছি। খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। শেষ সম্বল তিনটি গরু বিক্রি করেছি। করোনায় ব্যবসায় ধস নামে। এরপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাত আসে। বাড়ির সব সম্পদ শেষ হয়ে যায়। এখন আর পারছি না।’

প্রতাপনগরের কর্মকার মোড় এলাকার বাসিন্দা আবদুল মালেক অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাতারে কাজ করতেন। করোনার কারণে দেশে এসেছেন। পুনরায় সেখানে কাজ যোগ দিতে পারেননি। দেশে ফেরার সময় মাত্র সাত হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন। দেশে ফেরার অল্প দিনের ব্যবধানে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত করে। বাড়িরঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নানামুখী কৌশলে এই পরিবারটি সংকট সামাল দিচ্ছেন। সেই গল্পটাই জানাচ্ছিলেন বাবর আলীর স্ত্রী বিউটি বেগম। 

বিউটি বেগম বলেন, ‘আমার সংসারে আগে খরচ হতো ৭-৮ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি সংকটের সময়ে তিন বেলা ভাত খেতে পারিনি। কোনো দিন না খেয়েও কাটাতে হয়েছে। কম দামের চাল কিনে কোনোমতে দিন কাটিয়েছি। নিত্য প্রয়োজনের অনেক খরচ কমিয়েছি। গরু বিক্রি করেছি। সংকটের এই এক বছরে দেনা হয়েছি প্রায় ২ লাখ টাকা।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ শুরু হয়। ওই মাসেই মহামারির কারণে লকডাউন শুরু হয়। ফলে রাজধানীসহ বড় শহর থেকে চাকরি হারিয়ে বহু মানুষ এলাকায় ফিরতে শুরু করেন। সারাদেশেই এই সংকট ছিল। কিন্তু দেশের পশ্চিম উপকূলের মানুষের জন্য এই সংকট ছিল আরও বেশি। কারণ ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত করে। বাইরে চাকরিরত মানুষেরা চাকরি হারিয়ে দলে দলে এলাকায় আসে। এলাকায় এসেই তারা ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়েন।’

কার্তিক মণ্ডল। বয়স ৩৫। বাড়ি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের হাজতখালী গ্রামে।

কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘আমি খুলনা শহরে শ্রমিকের কাজ করতাম। করোনার লকডাউনের কারণে এলাকায় এসেছি মে মাসের প্রথম দিকে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আমাদের গ্রামটাই ভাসিয়ে নিয়ে গেল। এখন বেড়িবাঁধের ওপরে বসবাস করি পরিবার নিয়ে। এলাকায় দিন মজুরের কাজ করছি। তিন বেলা খাবার জোগানো কষ্টকর হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন টিকে থাকতে পারবো, জানি না।’ 

কার্তিক মণ্ডলের নিকটবর্তী পরিতোষ মণ্ডল, ঊষা মণ্ডল, কিংবা মজনু সরদার এবং আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলে তাদের টিকে থাকার কৌশল জানা যায়।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান বিধ্বস্ত এলাকায় খাদ্য ও আবাসনের তীব্র সংকট। খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কাটমারচর গ্রামের ছবি

টিকে থাকার কৌশল: কী বলছে সমীক্ষা? 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ওই উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে তাদের কোপিং ম্যাকানিজম যাচাই করেছে। সেখানে সাত ধরনের কৌশলের চিত্র উঠে এসেছে। এগুলো হচ্ছে, দৈনিক খাবার কমিয়ে দেওয়া, ঋণ গ্রহণ এবং ভিক্ষাবৃত্তি, চিকিৎসার ব্যয় কমানো, সম্পদ বিক্রি, বাস্তুচ্যুত, শিশু শ্রম, এবং ত্রাণ সহায়তা। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাতের পর ২০২০ সালের মে মাসে পরিচালিত সমীক্ষায় এক ধরনের চিত্র পাওয়া যায়। আবার একই বছরের ডিসেম্বরে পরিচালিত সমীক্ষায় ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে। 

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মে মাসে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া কথা বলেছেন ৭৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের সমীক্ষায় এই হার ১০০ শতাংশ। মে মাসে ঋণ গ্রহণ এবং ভিক্ষাবৃত্তির হার ছিল ৪৫ শতাংশ; তবে ডিসেম্বরে দেখা গেছে এই হার ৬৭ শতাংশ। মে মাসে চিকিৎসার ব্যয় কমানোর কথা বলেছেন ৮৩ শতাংশ মানুষ। কিন্তু ডিসেম্বরে এই হার ৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়। মে মাসের সমীক্ষায় সম্পদ বিক্রির কথা বলেছেন ৩৯ শতাংশ, কিন্তু ডিসেম্বরে এই হার ৭৩ শতাংশে দাঁড়ায়। মে মাসে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কথা বলেছেন ২২ শতাংশ, ডিসেম্বরে এই হার কমে দাঁড়ায় ১৭ শতাংশে। মে মাসে শিশু শ্রমের হার ছিল ৫৯ শতাংশ, ডিসেম্বর মাসে এই হার কমে দাঁড়ায় ৫৪ শতাংশে। মে মাসে ত্রাণ নিয়ে পরিবারের খরচ পুষিয়েছেন ৯৪ শতাংশ মানুষ, ডিসেম্বর মাসে এই হার কমে দাঁড়ায় ৭৯ শতাংশ।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ এর কর্মসূচি উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ জাহিন শামস সাক্ষর বলেন, ‘মানুষগুলো অত্যন্ত কষ্ট করে সময় পার করছেন। তারা কীভাবে টিকে আছেন এবং তাদের কী ধরনের সহায়তা দরকার, সেটা বোঝার জন্যেই আমরা এই সমীক্ষা করেছি। সমীক্ষায় দেখা গেছে, অনেক পরিবারকে প্রতিদিনের খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। মূল্যবান সম্পদ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এদের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। এজন‌্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী এগিয়ে আসতে হবে।’

টিকে থাকার কৌশল: একটি গ্রাম পর্যবেক্ষণ

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে একটি ভামিয়া। এটি সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে অবস্থিত। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কীভাবে টিকে আছেন? তাদের জন্য করণীয় কি? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভামিয়া গ্রামে গিয়েছিল বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) এর জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির একটি দল। দলটিকে স্থানীয় স্তরে কোভিড-১৯ এবং ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দ্বিগুণ প্রভাব অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অনুসন্ধানের লক্ষ্য ছিল, লোকেরা কীভাবে এই দ্বিগুণ সংকটের মোকাবিলা করছে এবং কীভাবে তাদের পুনরুদ্ধার ও উন্নততরভাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করা যেতে পারে, তা বোঝা।

পর্যবেক্ষণকারী দলটি দেখতে পেয়েছে, আম্ফান যখন মহামারির মাঝে গ্রামটিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, তখন মানুষের মোকাবিলা করার ক্ষমতা অত্যধিক ভারী হয়ে পড়েছিল। সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারা বাঁধের ধস রোধ করতে পারেননি। এরফলে বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়েছিল। সেই পর্যায়ে, সরকার ও এনজিও থেকে সরবরাহ করা ত্রাণ সহায়তা বেঁচে থাকার প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। সহায়তা ছাড়াও লোকেরা তাদের অবশিষ্ট সম্পদ বিক্রি করে। কিছু পরিবার তাদের জীবিকার উৎস পরিবর্তন করেন। অনেকে নতুন ঋণের মাধ্যমে তাদের পেশা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করেন। এই স্বল্প মেয়াদে সরকারের কর্মসূচিগুলি দিনমজুরদের সংকট থেকে বাঁচতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

পর্যবেক্ষণ দলটি দেখেছে, সংকট চলাকালে ভামিয়া গ্রামের নারীরা গৃহ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা নিজেদের সঞ্চয় দিয়ে পরিবারের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অনেকে শাকসবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। কেউ হস্তশিল্প, টেইলারিংয়ের মত ছোট ব্যবসার জন্য আয়ের উপার্জন নিশ্চিত করেছেন। পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে গিয়ে নারীদের ওপর কাজের চাপ বেড়ে গিয়েছিল। 

বেড়িবাঁধের ওপরে এখনো সারি সারি ঘর। সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ছবি

টেকসই জীবন জীবিকা নিশ্চিত করতে হবে

খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) এর জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির সমন্বয়কারী মাহমুদুল হাসান বলেন, বেশিরভাগ স্থানীয় মানুষ বিশ্বাস করেন যে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণসহ বাঁধগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা দুর্যোগের ঝুঁকিটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে। সরকার ও এনজিওগুলোর উচিত তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাতে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা। প্রকল্পগুলোর ডিজাইন এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের জলবায়ু চরম ইভেন্টগুলির ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য প্রকল্পগুলো সর্বদা মূল্যায়ন করা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী টেকসইয়ের জন্য এই প্রচেষ্টা অপরিহার্য। যদি এটি না ঘটে থাকে তবে আম্ফানের মত পরবর্তী বিপর্যয় এখন পর্যন্ত করা সমস্ত বিনিয়োগ ধুয়ে ফেলবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের এই মোকাবিলার কৌশলগুলো কিছুক্ষণের জন্য ব্যথা হ্রাস করতে পারে, দীর্ঘস্থায়ীভাবে যন্ত্রণা শেষ করতে পারে না। ইন্টিগ্রেটেড, টেকসই এবং কার্যকর পুনরুদ্ধার পদ্ধতির সম্প্রদায় স্তরে প্রায় অনুপস্থিত। বিভিন্ন এনজিও প্রকল্পে চালু হওয়া বেশিরভাগ বিদ্যমান অভিযোজন অভ্যাসগুলো কোভিড-১৯ এবং ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ব্যাহত হয়েছিল। জলবায়ু ঝুঁকি ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে এবং পরবর্তী বিপর্যয় হুমকির সম্মুখীন হবে, এই বিষয়টি নিশ্চিত করেই অভিযোজনমূলক কাজগুলোর প্রকৃত প্রভাব পরিমাপ করা দরকার। সেরা অভিযোজন সংক্রান্ত বিকল্পগুলো চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

দেশের পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় কর্মরত আরেকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স’র নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, সংকটাপন্ন পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার মানুষেরা নিজেদের কোপিং ম্যাকানিজম দিয়ে টিকে থাকার লড়াই করছেন। এই এলাকার মানুষদের দুর্যোগের জন্য একটা প্রস্তুতি থাকে। তারা টিকে থাকার নানান কৌশল অবলম্বন করেন। আমরা দেখছি, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতের পরে অনেক মানুষ ব্যাংক এবং এনজিওতে জমানো সঞ্চয়ের টাকা তুলে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করেছেন। অনেকে মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়েছেন। যেসব স্থানে লবণাক্ততা অপেক্ষাকৃত কম, সেখানে সবজির চাষ করেছেন অনেকে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সমন্বিত এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। আর সবার আগে এই অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’

আরও পড়ুন :

উপকূলে বেড়েছে জীবনের সংকট
*মহামারিতে ঘূর্ণিঝড়: মরার উপর খাঁড়ার ঘা
*এখনও স্পষ্ট ধ্বংসের চিহ্ন

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়