ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

প্রাণি বাঁচাতে কৃত্রিম মাংস! (ভিডিও)

মো. রায়হান কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৮, ২৪ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রাণি বাঁচাতে কৃত্রিম মাংস! (ভিডিও)

মো. রায়হান কবির : আমেরিকাতে আজ পালন করা হচ্ছে থ্যাংকস গিভিং ডে। আর থ্যাংকস গিভিং ডে’র প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে টার্কির রোষ্ট। টার্কি হচ্ছে, এক ধরনের পাখি। আমেরিকানরা এই পাখির রোষ্ট খুব পছন্দ করে।

 

তাই থ্যাংকস গিভিং ডে’তে এর প্রচুর চাহিদা থাকে। ধারণা করা হয় প্রতি থ্যাংকস গিভিং ডে’তে প্রায় ৫ কোটি টার্কি খাওয়া হয়। অর্থাৎ প্রতি থ্যাংকস গিভিং ডে’তে ৫ কোটি পাখি হত্যা করা হয়।

 

তাছাড়া আমেরিকানদের আরেকটি প্রিয় খাবার হচ্ছে বার্গার। বিশেষ করে হ্যাম বার্গার। আর এই হ্যাম বার্গারের প্রধান উপাদান হচ্ছে গরুর মাংস। ফলে আমেরিকানরা অতি মাত্রায় মাংসভোজী। এতে করে চাপ পরছে পশু ও পাখি কূলে। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে অনেক দেশেই মাংসের চাহিদা আছে। আমেরিকার মতো এশিয়া কিংবা ইউরোপেও কিন্তু ভালো মাংস খাওয়া হয়। এক কথায় বলা যায় পুরো বিশ্বজুড়েই মাংসের চাহিদা মেটাতে হত্যা করা হয় অনেক পশু ও পাখি।

 

আর এর প্রভাব পড়ছে প্রকৃতিতে। প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাচ্ছে এসব প্রাণীর অভাবে। এসব অনেক দিক বিবেচনা করেই কৃত্রিম মাংসের প্রতি অধিক মনোযোগ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তারা চাইছেন পশু-পাখি বাঁচাতে হলে মাংসের জন্যে বিকল্প খুঁজতে হবে। কিন্তু বিকল্প খাবারে মানুষের রুচি নেই! মাংসের স্বাদ একবার যে পায় তাকে সবজিতে সহজে অভ্যস্ত করা যায় না। তাই এবার ভরসা, ল্যাবে উৎপাদিত কৃত্রিম মাংসের ওপর।

 

‘মেম্ফিস মিট’ নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠান তহবিল গঠন করছে কৃত্রিম মাংসের উৎপাদন ও বিপণনের জন্যে। একই সঙ্গে তারা চাইছে এই সমন্ধীয় গণসচেতনতা বাড়াতে। তাই তারা বিভিন্নভাবে এর প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা ল্যাবে গরুর মাংস উৎপাদনে সফল হয়েছে। এবং তার স্বাদ, গন্ধ এবং রঙ অবিকল গরুর মাংস বা বিফের মতোই। এমনকি ল্যাবে উৎপাদিত এই মাংস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মিট বল। যার স্বাদও নাকি প্রাকৃতিক মাংস দিয়ে উৎপাদিত মিট বলের মতোই।

 

মেম্ফিস মিট তাদের প্রচারণায় এবার থ্যাংকস গিভিং ডে’কে প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা বলছে, যদি সুযোগ ও তহবিল পাওয়া যায় তবে তারা আগামীতে ‘টার্কি’র মাংসও উৎপাদন করবে, ল্যাবেই! ফলে বেঁচে যাবে লাখ লাখ টার্কি। প্রকৃতি ফিরে পাবে ভারসাম্য। এই মহৎ উদ্দেশ্যে তারা ৩ ডলার থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত দান নিচ্ছে। যা তাদের গবেষণা এবং প্রচারণায় ব্যবহার করা হবে। এর বদলে দাতাদের পানির বোতল, হুডি কিংবা স্টিকার দান ভেদে দেয়া হবে।

 

মেম্ফিস মিট তাদের প্রচারণায় আরেকটি দিক উল্লেখ করছে, সেটা হল, ‘ক্লিন মিট’। কেননা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে প্রাকৃতিক মাংসে প্রচুর পরিমানে ব্যাকটেরিয়া থাকে। এবং এর থেকে নানা রোগ সংক্রমিত হয়। কিন্তু ল্যাবে উৎপাদিত মাংস প্রায় ব্যাকটেরিয়া মুক্ত। তাই এর থেকে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। তাই একে ক্লিন মিট হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।

 

তবে এই মাংসের উৎপাদন খরচ কত, বা কেমন হতে পারে এর বাজার মূল্য সে সম্পর্কে কোনো ধারনা দেয়া হয়নি। প্রাণী কোষ থেকে মাংস উৎপাদন হবে বলে এটি প্রকৃতিকে আরো বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত করবে। কারণ, ল্যাবে উৎপাদিত মাংস শুধু পশু-পাখিই বাঁচাবে না আরো বাঁচাবে গো-খাদ্য। ফলে ঘাস বা অন্যান্য উদ্ভিদের ওপর চাপ কমে আসবে। এখন দেখার বিষয় এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ কতটা সাড়া দেয় এবং এর বাণিজ্যিক উৎপাদন কতটা সফল এবং সাশ্রয়ী হয়।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ নভেম্বর ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়